লন্ডনে অনুষ্ঠিত সাম্প্রতিক রাজনৈতিক সংলাপ নিয়ে দেশের রাজনীতিতে একদিকে যেমন আশার সঞ্চার হয়েছে, তেমনি কিছু দলের ভেতরে জমেছে অসন্তোষ। সেই মনোভাব স্পষ্ট করে জানিয়ে দিয়েছেন বিএনপি (BNP)-র যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স (Syed Emran Saleh Prince)। তার বক্তব্য অনুযায়ী, জামায়াত ও এনসিপি (National Citizens’ Party)-র মতো দলগুলোর ‘নির্বাচন ছাড়াই ক্ষমতা পাওয়ার সময় ফুরিয়ে আসছে’।
বুধবার (১৮ জুন) বিকেলে ময়মনসিংহের ধোবাউড়া উপজেলার ঘোষগাঁও ইউনিয়নের শের-ই-বাংলা উচ্চবিদ্যালয় মাঠে ইউনিয়ন বিএনপি আয়োজিত এক কর্মী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ মন্তব্য করেন প্রিন্স।
টানা বৃষ্টির মধ্যেও ছিল নেতাকর্মীদের ব্যাপক উপস্থিতি। ছাতা মাথায় দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা মানুষেরা নেতাদের বক্তব্য মনোযোগ দিয়ে শোনেন। প্রিন্স বলেন, “নির্বাচন ছাড়া ক্ষমতায় টিকে থাকার অপচেষ্টা লন্ডনের বৈঠকে ব্যর্থ হয়েছে। নির্বাচন অনিবার্য। ইতিমধ্যেই তার ঘণ্টা বেজে গেছে। দেশের স্থিতিশীলতা এবং জনগণের অধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠার একমাত্র পথ নির্বাচন।”
এ সময় তিনি জামায়াত ও এনসিপিকে ইঙ্গিত করে বলেন, “লন্ডন বৈঠকে যাদের মন খারাপ হয়েছে, তাদের বলব—এই আলোচনার সুবাতাস নিজের গায়ে লাগান। এতে গণতন্ত্র ফেরার সম্ভাবনা বাড়বে, সবারই মঙ্গল হবে।”
তিনি আরও বলেন, “২০২৪ সালের গণআন্দোলনের যে আকাঙ্ক্ষা ছিল, সেটি বাস্তবায়নে বিএনপিকে প্রস্তুত থাকতে হবে। জনগণের প্রত্যাশা আমাদের প্রতি অনেক বেশি, তাই দায়িত্বও অনেক বেশি। জনপ্রিয়তা ধরে রেখে অঙ্গীকার বাস্তবায়নের জন্য দলকে এখন ঐক্যবদ্ধ ও সংগঠিত হতে হবে।”
কর্মী সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন ধোবাউড়া উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক অধ্যাপক আজহারুল ইসলাম কাজল এবং সঞ্চালনা করেন সদস্যসচিব আনিসুর রহমান মনিক।
সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির কেন্দ্রীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আবু ওয়াহাব আকন্দ, ময়মনসিংহ উত্তর জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মোতাহার হোসেন তালুকদার এবং উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি মফিজ উদ্দিন।
আবু ওয়াহাব আকন্দ বলেন, “সংগঠনের কাজের পাশাপাশি ধানের শীষের প্রচারে মন দিতে হবে। নির্বাচন ও সংস্কার নিয়ে যে অচলাবস্থা ছিল, তা এখন কেটে গেছে।”
মোতাহার হোসেন তালুকদার বলেন, “যারা নানা অজুহাতে বিএনপিকে ঠেকাতে চায়, জনগণ তাদেরই ঠেকাবে। আওয়ামী লীগ বিএনপিকে শেষ করতে গিয়ে নিজেরাই শেষ হয়ে যাচ্ছে।”
বৃষ্টিস্নাত কর্মী সমাবেশে আদিবাসী নারী-পুরুষসহ বিভিন্ন গ্রামের মানুষ ঢোল, বাঁশি ও শ্লোগানমুখর মিছিল নিয়ে অংশ নেয়। সুশৃঙ্খল পরিবেশে তারা নেতা-নেত্রীদের বক্তব্য শোনে, যা একপর্যায়ে কর্মী সভাকে জনসমাবেশের রূপ দেয়।