আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে এখনো সরকারের পক্ষ থেকে সেনাবাহিনীর কাছে অফিসিয়াল কোনো নির্দেশনা পৌঁছেনি বলে জানিয়েছেন কর্নেল মো. শফিকুল ইসলাম (Colonel Md. Shafiqul Islam)। তবে তিনি স্পষ্ট করে বলেন, সরকার নির্দেশ দিলে নির্বাচন সংশ্লিষ্ট দায়িত্ব পালনে সেনাবাহিনী সম্পূর্ণ প্রস্তুত থাকবে।
বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) ঢাকা সেনানিবাসে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের নানা প্রশ্নের জবাবে এসব কথা জানান মিলিটারি অপারেশনস ডিরেক্টরেটের (Military Operations Directorate) এই কর্মকর্তা। তিনি বলেন, “আমরা এখনো সরকারের পক্ষ থেকে কোনো অফিসিয়াল নির্দেশ পাইনি। তবে সরকার নির্দেশ দিলে, সংবিধান অনুযায়ী, সেনাবাহিনী সেই দায়িত্ব পালন করবে।”
মব ভায়োলেন্স নিয়ে কঠোর অবস্থানে সেনাবাহিনী
সাম্প্রতিক সময়ে দেশে মব ভায়োলেন্স বেড়েছে কি না—এমন প্রশ্নের জবাবে কর্নেল শফিকুল বলেন, “সেনাবাহিনী যেকোনো ধরনের মব ভায়োলেন্স কিংবা জনদুর্ভোগ সৃষ্টিকারী পরিস্থিতির বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছে। রংপুরের একটি ঘটনায় সেনাবাহিনী তাৎক্ষণিক উপস্থিত হওয়ায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়েছিল।” তিনি দাবি করেন, এর ফলে দেশে মব ভায়োলেন্স অনেকাংশে কমে এসেছে।
ঈদে মানুষের পাশে ছিল সেনাবাহিনী
ঈদুল আজহা উপলক্ষে সেনাবাহিনীর কর্মকাণ্ড নিয়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন কর্নেল শফিকুল। জানান, “বাস, রেলস্টেশন, লঞ্চ টার্মিনালে আমাদের সদস্যরা দিনরাত টহল দিয়েছেন। চেকপোস্ট বসিয়ে বাসের গতি নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে। নারী অফিসাররাও কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করেছেন।”
তিনি আরও জানান, ঈদের সময় ১২৫৫টি যানবাহন থেকে ৩৫ লাখেরও বেশি টাকা যাত্রীদের ফেরত দেওয়া হয়েছে। ফলে সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যুর হার আগের বছরের তুলনায় ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে বলেও দাবি করেন তিনি।
পতাকা বিক্রেতাকে এক লাখ টাকা সহায়তা
একটি আন্তর্জাতিক ফুটবল ম্যাচ চলাকালে জাতীয় পতাকা বিক্রির সময় এক ব্যক্তিকে পেটানোর ঘটনায় প্রশ্নের জবাবে কর্নেল শফিকুল বলেন, “ঘটনাটি দুঃখজনক এবং বিচ্ছিন্ন। পরে আমরা ওই বিক্রেতাকে ডেকে সমবেদনা জানাই এবং তার ব্যবসা চালু রাখার জন্য তাকে এক লাখ টাকা সহায়তা দিই।”
সীমান্ত পরিস্থিতি ও শীর্ষ সন্ত্রাসী গ্রেপ্তার
ভারত ও মিয়ানমার সীমান্তে পুশইন পরিস্থিতি প্রসঙ্গে কর্নেল শফিকুল বলেন, “এখন পর্যন্ত সেনাবাহিনীর সম্পৃক্ততার প্রয়োজন দেখা দেয়নি। বিজিবি এবং কোস্টগার্ড সতর্ক অবস্থানে আছে, তারা ক্যাম্প ও টহল বাড়িয়েছে। গোয়েন্দা নজরদারিও জোরদার করা হয়েছে।”
সাম্প্রতিক সময়ে একাধিক শীর্ষ সন্ত্রাসী গ্রেপ্তার করেছে সেনাবাহিনী। এ বিষয়ে প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, “এ ধরনের অভিযানে সেনাবাহিনী গোপনীয়তা বজায় রাখে। তবে ভবিষ্যতেও অভিযানিক কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।”
দেশজুড়ে নিরাপত্তা ও শৃঙ্খলা রক্ষায় সেনাবাহিনী সবসময় প্রস্তুত বলেও জানান এই কর্মকর্তা।