প্রধান উপদেষ্টার বৈঠক নিয়ে জামায়াতের ক্ষোভ: ‘একটি দলের সঙ্গে বৈঠক নজিরবিহীন ও পক্ষপাতদুষ্ট’

একটি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে একক বৈঠক ও স্টেটমেন্টকে ‘নজিরবিহীন ও সমীচীন নয়’ উল্লেখ করে কড়া সমালোচনা করলেন ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের (Dr. Syed Abdullah Mohammad Taher)। শুক্রবার কুমিল্লার দেবীদ্বারে এক নির্বাচনী সভা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, প্রধান উপদেষ্টার এধরনের আচরণ পক্ষপাতিত্বের বার্তা দেয়। এ কারণেই জামায়াত দ্বিতীয় দফার আলোচনায় অংশ নেয়নি এবং সরাসরি স্টেটমেন্ট দিয়ে তাদের আপত্তি জানিয়েছে বলে দাবি করেন জামায়াতের এই কেন্দ্রীয় নায়েবে আমির।

তাহের বলেন, “প্রধান উপদেষ্টা চাইলে সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা করতে পারতেন। কিন্তু লন্ডনে গিয়ে একটি বিশেষ দলের সঙ্গে বৈঠক করে তিনি পক্ষপাতিত্ব দেখিয়েছেন।”

তবে পরবর্তীতে প্রধান উপদেষ্টা জামায়াতের আমিরকে ফোন করে আশ্বস্ত করেন যে তিনি নিরপেক্ষভাবে কাজ করছেন এবং কারো প্রতি পক্ষপাত দেখাবেন না। তিনি নাকি বলেছেন, “আমাকে সময় দিন, আমি নিরপেক্ষ নির্বাচনের প্রমাণ দেব।”

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে আলোচনার প্রসঙ্গে তাহের জানান, কিছু প্রস্তাবে জামায়াত একমত, আবার কিছুতে দ্বিমত করেছে। তবে ঐকমত্য তৈরির প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। জামায়াত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রক্রিয়ায় সংস্কার চায় এবং সংসদ সদস্যদের বাইরে জেলা পরিষদ সদস্য, ইউপি চেয়ারম্যান ও পৌর মেয়রদের অন্তর্ভুক্ত করে একটি বৃহত্তর ইলেক্টোরাল কলেজ গঠনের প্রস্তাব দিয়েছে। তাহেরের মতে, এতে শাসক দলের একক আধিপত্য রোধ করা সম্ভব হবে।

প্রধানমন্ত্রী পদের মেয়াদ নিয়ে তিনি বলেন, টানা দুইবারের বেশি কেউ প্রধানমন্ত্রী থাকতে পারবে না—এমন প্রস্তাবে অধিকাংশ দল একমত হয়েছে, যদিও বিএনপি এখনো আলাদা অবস্থানে রয়েছে।

এছাড়া, সংবিধান সংশোধন, অনাস্থা প্রস্তাব ও বাজেট ছাড়া অন্যান্য বিষয়ে দলীয় হুইপ না মেনে এমপিদের স্বাধীন মত প্রকাশের সুযোগ দেওয়ার প্রস্তাবে বেশিরভাগ রাজনৈতিক দল সম্মত হয়েছে বলেও জানান তাহের।

লন্ডনে বিএনপি (BNP)–র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার বৈঠক নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তাহের বলেন, “এটা স্বাভাবিক। প্রধান উপদেষ্টা অন্যান্য দলের সঙ্গেও বৈঠক করেছেন।”

স্থানীয় ও জাতীয় নির্বাচন প্রসঙ্গে জামায়াতের অবস্থান জানিয়ে তাহের বলেন, “আমরা চাই ডিসেম্বরেই স্থানীয় নির্বাচন হোক, এরপর জাতীয় নির্বাচন।”

বিএনপির সঙ্গে জামায়াতের সম্পর্ক বিষয়ে তিনি বলেন, “দূরত্ব বাড়ছে না। ওরা তাদের অবস্থান থেকে বলছে, আমরাও আমাদের অবস্থান থেকে কথা বলছি। সব দলের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক ভালো আছে।”

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *