জামায়াতে ইসলামীর (Jamaat-e-Islami) কেন্দ্রীয় নায়েবে আমীর ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের মনে করেন, জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় নির্বাচন হওয়াই যুক্তিসঙ্গত। শুক্রবার (২০ জুন) কুমিল্লার দেবিদ্বার উপজেলা পরিষদের হলরুমে এক নির্বাচনী সমাবেশ শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি বলেন, “জামায়াতে ইসলামী শুরু থেকেই বলে আসছে—আগে স্থানীয় নির্বাচন হওয়া উচিত। আমরা মনে করি, ডিসেম্বরেই স্থানীয় নির্বাচন হতে পারে। এরপর যে কয় মাস সময় থাকবে, সেই সময়ের মধ্যেই জাতীয় নির্বাচন হওয়া সম্ভব।”
ডা. তাহের আরও জানান, জাতীয় ঐক্যমত কমিশনের (National Consensus Commission) সঙ্গে জামায়াতে ইসলামীর বৈঠক হয়েছে। বৈঠকে কিছু বিষয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে একমত তৈরি হলেও এখনো কিছু বিষয়ে মতপার্থক্য রয়ে গেছে। তবে আলোচনা চলমান রয়েছে এবং সমঝোতায় পৌঁছানোর চেষ্টা অব্যাহত আছে।
প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের পদ্ধতি পরিবর্তনের প্রস্তাবও দেন ডা. তাহের। তিনি বলেন, “বর্তমানে প্রেসিডেন্ট সংসদ সদস্যদের ভোটে নির্বাচিত হন, ফলে তিনিও ক্ষমতাসীন দলের প্রতিনিধিত্ব করেন। আমরা প্রস্তাব দিয়েছি—সংসদ সদস্য, জেলা পরিষদ সদস্য, পৌর মেয়র, কাউন্সিলর এবং ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানদের নিয়ে একটি ইলেকটোরাল কলেজ গঠন করে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন করা হোক। এতে একজন যোগ্য, সম্মানিত ও নিরপেক্ষ ব্যক্তি রাষ্ট্রপতি হওয়ার সুযোগ পাবেন।”
প্রধানমন্ত্রী পদে মেয়াদসীমা প্রসঙ্গে জামায়াত নেতার বক্তব্য, “আমরা প্রস্তাব দিয়েছি, যেন কেউ টানা দুই মেয়াদের বেশি প্রধানমন্ত্রী হতে না পারেন। বিএনপি ছাড়া প্রায় সব দল এতে একমত হলেও, চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত এখনো হয়নি। আগামীকাল (রোববার) থেকে এ প্রস্তাব নিয়েই আবার আলোচনা শুরু হবে।”
এছাড়াও সংসদীয় বিধান সংক্রান্ত একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তাব তুলে ধরেন তিনি। তাহের বলেন, “আমরা চাই সংবিধান সংশোধন, অনাস্থা প্রস্তাব ও বাজেট ছাড়া অন্য কোনো বিষয়ে যদি কোনো সংসদ সদস্য নিজের দলের বিপক্ষে ভোট দেন, তাহলে সেটি যেন বৈধ হিসেবে গণ্য হয়।”
জামায়াতের অবস্থান পরিষ্কার: তারা নির্বাচনমুখী রাজনীতিতে অংশ নিতে প্রস্তুত এবং নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কারে বাস্তবমুখী কিছু প্রস্তাব দিচ্ছে। এই প্রক্রিয়ায় দলটি অন্য রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে ঐকমত্য তৈরির চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
