একটি ফেসবুক পোস্টে সাম্প্রতিক নির্বাচন ঘিরে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন এক্টিভিস্ট ও অ্যাডভোকেট হাবিবুর রহমান (Habibur Rahman)। তার মতে, বিএনপি যদি আন্দোলনের নেতৃত্ব দেওয়া দলগুলোর প্রতি সমর্থন না দেয় এবং তারা নির্বাচনে জামানত হারিয়ে ফেলেন, তাহলে গোটা গণ-আন্দোলনই তাত্ত্বিক ও আন্তর্জাতিকভাবে প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়তে পারে।
হাবিবুর রহমান বলেন, “নাসিরুদ্দিন পাটোয়ারী (Nasiruddin Patoary)-র এক বক্তব্যে দেখলাম, তার মতে বিএনপি ৫০ থেকে ১০০টির বেশি আসন পাবে না। আমি তার অনুমান নিয়ে কিছু বলব না। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে, বিএনপি যদি ছাড় না দেয়, তাহলে এনসিপির (NCP) সর্বোচ্চ নেতা নাহিদ ইসলামও জামানত হারাবেন। আর এই চিত্র দেখা যাবে প্রায় সব আসনেই।”
তাঁর ভাষ্য অনুযায়ী, আন্দোলনের ফসল ঘরে তোলার জন্য সঠিক রাজনৈতিক কৌশল নেওয়া জরুরি ছিল। “যারা নেতৃত্ব দিয়েছে আন্দোলনে, তারা যদি নির্বাচনে ভরাডুবি করে, তাহলে আন্দোলনটাই হয়ে যাবে বিতর্কিত। ভারতসহ নানা আন্তর্জাতিক মহল তখন বলবে—এটা আসলে জনগণের আন্দোলন ছিল না।”
তিনি মনে করেন, এই পরিস্থিতি তৈরি হলে আবার বিএনপিকেই এগিয়ে এসে বলতে হবে, “এটা আমাদের আন্দোলন ছিল, ওরা নির্বাচিত হয়নি, কিন্তু আমরা হয়েছি।” এতে রাজনৈতিক অবস্থান ও নৈতিক শক্তি হ্রাস পেতে পারে বলে তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেন।
হাবিবুর রহমানের দৃষ্টিতে সবচেয়ে বড় ভুল হলো তাড়াহুড়ো করে নির্বাচনে যাওয়া। “এই নির্বাচন না করে পরে দল গঠন করে, পরের নির্বাচনে অংশ নিলে অন্তত নিজেদের ও আন্দোলনের মুখ রক্ষা করা যেত। কিন্তু কয়েকজনের ক্ষমতার মোহ ও অর্থনৈতিক স্বার্থ অনেক সম্ভাবনা নষ্ট করেছে।”
তার মতে, পাটোয়ারীদের হঠকারী বিশ্লেষণকে উপেক্ষা করে এখনো সময় আছে ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়ার। তিনি বলেন, “বিএনপির উচিত এখনই এনসিপিকে কিছুটা সহযোগিতা করা, যাতে আওয়ামী লীগ এই রাজনৈতিক শূন্যতার সুযোগ না নিতে পারে।”
এই পোস্টে হাবিবুর রহমান কেবল রাজনৈতিক কৌশল নয়, বরং বৃহত্তর গণতান্ত্রিক আন্দোলনের ভাবমূর্তি ও ভবিষ্যৎ দিকনির্দেশনা নিয়েই এক ধরনের সতর্কবার্তা দিয়েছেন। তাঁর মতে, যদি সঠিক কৌশল নেওয়া না হয়, তবে রাজনীতিতে যে সুযোগ তৈরি হয়েছিল, সেটাই আবার শাসকগোষ্ঠীর হাতে চলে যেতে পারে।