বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বরিশাল জেলা কমিটির যুগ্ম সদস্য সচিব পদে স্থগিত থাকা মারযুক আব্দুল্লাহ (Marzuk Abdullah)-র বিরুদ্ধে ডাকাতির প্রস্তুতির অভিযোগে মামলা হয়েছে। পটুয়াখালীর দুমকি থানায় দায়ের হওয়া এ মামলায় তাকে পলাতক আসামি করা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, পায়রা সেতুর টোল প্লাজায় সন্দেহজনক আচরণের পর আটক হওয়া দুই যুবক জবানবন্দিতে মারযুকের নাম উল্লেখ করে জানায়, তারা একটি ডাকাত দলের সদস্য।
মামলার বাদী নুরুজ্জামান (Nuruzzaman), যিনি দুমকি থানার উপ-পুলিশ পরিদর্শক, ৬ জুন মামলাটি দায়ের করেন। তবে বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে সম্প্রতি। মামলার বিবরণ অনুযায়ী, সেদিন রাতে বরিশাল-পটুয়াখালী মহাসড়কের পায়রা সেতুর কাছে একটি চেকপোস্টে তল্লাশি চলাকালে দুটি মোটরসাইকেলের গতিবিধি পুলিশের সন্দেহ জাগায়। চেকপোস্টের কাছাকাছি এলে এক মোটরসাইকেল রেখে তিন আরোহী দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করেন।
পুলিশ এ সময় শিপন ও মামুন নামের দুই যুবককে আটক করে। তাদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয় একটি খেলনা পিস্তল, একটি ওয়াকিটকি, একটি ইলেকট্রিক শক ডিভাইস, একটি মোটরসাইকেল এবং দুটি মোবাইল ফোন। তাদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, পালিয়ে যাওয়া তরুণের নাম মারযুক আব্দুল্লাহ এবং তারা একটি পেশাদার ডাকাত দলের অংশ। জবানবন্দিতে তারা আরও জানায়, দেশের বিভিন্ন এলাকায় সাধারণ মানুষকে ভয় দেখিয়ে তারা অর্থ আদায় করে।
দুমকি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাকির হোসেন (Zakir Hossain) বলেন, “আটক দু’জনকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। পলাতক মারযুক আব্দুল্লাহকে গ্রেপ্তারে চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।”
তবে পালিয়ে থাকা মারযুক এ অভিযোগ সম্পূর্ণ অস্বীকার করেছেন। তার ভাষ্য, “আওয়ামী লীগের সাংবাদিকরা আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে। আমি এর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিচ্ছি। দুমকি পুলিশের সঙ্গেও আমার বিষয়টি মীমাংসা হয়ে গেছে।”
প্রসঙ্গত, জুলাই আন্দোলন চলাকালে হামলার শিকার হওয়ার অভিযোগ তুলে গত ৯ মে বরিশাল কোতোয়ালি মডেল থানায় একটি মামলা করেছিলেন মারযুক। মামলায় ১৪ দলের সমন্বয়ক আমির হোসেন আমু (Amir Hossain Amu), বরিশাল ও ঝালকাঠির বেশ কয়েকজন আওয়ামী লীগ নেতা ও জনপ্রতিনিধিসহ ২৪৭ জনকে আসামি করা হয়।
তবে ৯ মাস আগের ঘটনার মামলা হঠাৎ করে দাখিল হওয়া এবং তা নিয়ে কথিত ‘মামলা বাণিজ্যের’ অভিযোগ ওঠায় গত ২২ মে মারযুকের পদ স্থগিত করে বরিশাল জেলা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। এই পরিপ্রেক্ষিতে তার বিরুদ্ধে সাম্প্রতিক ডাকাতির প্রস্তুতির মামলা নতুন করে বিতর্ক ছড়িয়েছে।