গত ১৭ বছরে আওয়ামী লীগ (Awami League) যে ‘স্বৈরাচারী’ শাসন ও দমন-পীড়ন চালিয়েছে, তা ভুলে গেলে জাতি ভবিষ্যতের পথ হারাবে—এমন হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন বিএনপি (BNP) নেতা ও দলের কেন্দ্রীয় ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক আমিনুল হক (Aminul Haque)। রবিবার (২২ জুন) ঢাকার দক্ষিণখান ও বিমানবন্দর এলাকায় দুটি পৃথক অনুষ্ঠানে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সদস্য ফরম বিতরণ ও নবায়ন কার্যক্রমের উদ্বোধনকালে তিনি এই মন্তব্য করেন।
আমিনুল হক বলেন, “এই স্বৈরাচারী শাসনের ইতিহাস যারা মনে রাখে, তারা আওয়ামী লীগের সঙ্গে মেশা তো দূরের কথা, তাদের চেহারাও দেখা পাপ বলে মনে করে।” তিনি আরও যোগ করেন, দীর্ঘ ১৭ বছরের আন্দোলন-সংগ্রামে যারা দলের জন্য ত্যাগ স্বীকার করেছেন, তারাই সদস্য পদ নবায়নে অগ্রাধিকার পাবেন।
দলীয় পরিচয়ের প্রশ্নে তিনি কড়া ভাষায় বলেন, “যারা দিনে বিএনপি আর রাতে আওয়ামী লীগ করেছেন, কিংবা আওয়ামী নেতাদের সঙ্গে অন্তরঙ্গ ছবি তুলে ঘনিষ্ঠতা প্রকাশ করেছেন, তাদের সদস্য পদ নবায়ন করা হবে না।”
সদস্য নবায়ন প্রক্রিয়ায় দলের প্রতি নিষ্ঠা ও বলিদানকে মূল মানদণ্ড হিসেবে তুলে ধরেন আমিনুল। তিনি বলেন, “ত্যাগ স্বীকারকারীরা থাকবেন সবার আগে। আর সুবিধাভোগী, দ্বৈত পরিচয়ের লোকদের জন্য দলে কোনো জায়গা নেই।”
নির্বাচন নিয়ে বিদেশি চক্রান্তের অভিযোগ
বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট প্রসঙ্গে আমিনুল হক বলেন, “অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর আমরা দ্রুত নির্বাচনের প্রত্যাশা করেছিলাম। কিন্তু দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রে সেই আশার পথও থমকে গেছে। আওয়ামী প্রেতাত্মারা এখনো নির্বাচন বানচালের অপচেষ্টায় সক্রিয়।”
এই বক্তব্যের মাধ্যমে তিনি স্পষ্ট ইঙ্গিত দেন, আগামী নির্বাচন প্রক্রিয়া এখনও নানা অনিশ্চয়তার মুখে রয়েছে, যার পেছনে শুধু অভ্যন্তরীণ নয়, আন্তর্জাতিক চাপ ও ষড়যন্ত্রও সক্রিয়।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপি (Dhaka North BNP) সদস্য সচিব মোস্তফা জামান, দক্ষিণখান থানা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক হেলাল তালুকদার এবং বিমানবন্দর থানা বিএনপির আহ্বায়ক মনির হোসেন ভূঁইয়া।
সদস্য নবায়নের মাধ্যমে সংগঠনকে নতুনভাবে চাঙ্গা করার ইঙ্গিত দেন নেতারা। এবং সেই প্রক্রিয়ায় দলীয় আদর্শ ও আত্মত্যাগকে সামনে রেখে ‘বিশ্বাসযোগ্য নেতৃত্ব’ তৈরির প্রতিশ্রুতিও আসে বক্তৃতায়।