‘নিশীরাতের নির্বাচনের’ দায়ে সাবেক সিইসি নুরুল হুদা গ্রেপ্তার, ‘জুতার মালা’ দিয়ে পুলিশে সোপর্দ

সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ কে এম নুরুল হুদাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। রোববার (২২ জুন) সন্ধ্যায় রাজধানীর উত্তরা এলাকায় স্থানীয় জনগণের হাতে লাঞ্ছনার পর তাকে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, তাকে আটক করে জনতা গলায় জুতার মালা পরিয়ে অপমান করে।

উত্তরা-পশ্চিম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হাফিজুর রহমান নিশ্চিত করেছেন, নুরুল হুদার বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে এবং তাকে থানায় আনা হয়েছে। এখন তার বিরুদ্ধে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।

জানা গেছে, রোববার বিএনপি শেরে বাংলা নগর থানায় আওয়ামী লীগ আমলের তিন প্রধান নির্বাচন কমিশনারের বিরুদ্ধে সংবিধান লঙ্ঘন করে নির্বাচনের অভিযোগে মামলা করেছে। মামলায় উল্লেখ করা হয়, এ কে এম নুরুল হুদা ‘নিশীরাতের নির্বাচন’ পরিচালনার মাধ্যমে গণতন্ত্রকে প্রহসনে পরিণত করেছিলেন। যদিও তার বিরুদ্ধে ছাত্র-জনতার পূর্ব আন্দোলন দমন সংক্রান্ত অভিযোগের ভিত্তিতেও মামলা আগেই ছিল।

এই প্রেক্ষাপটে নুরুল হুদার গ্রেপ্তার ছিল সময়ের ব্যাপার মাত্র—যা রাষ্ট্রের আইনি প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবেই বিবেচিত। তবে গ্রেপ্তারের আগে জনতার এ ধরনের লাঞ্ছনা ও অপমান সভ্য সমাজে কতটা গ্রহণযোগ্য, সেটিই এখন প্রশ্নের মুখে।

যদিও সিইসি হিসেবে তার কার্যকাল নিয়ে বিস্তর বিতর্ক রয়েছে, তবু একটি সভ্য রাষ্ট্রে আইনি প্রক্রিয়ার বাইরে জনতার হাতে একজন ব্যক্তিকে লাঞ্ছিত করা নৈতিক ও মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকেও অগ্রহণযোগ্য। এক সময় দেশের প্রভাবশালী মিডিয়াগুলো তার ভূমিকাকে সমর্থন কিংবা মৌন সমর্থনে শক্তি জুগিয়েছিল—সেই প্রেক্ষাপটও ভুলে যাওয়ার নয়।

নিশীরাতের নির্বাচন ছিল জনগণের সঙ্গে সরাসরি বিশ্বাসঘাতকতা। তবে বিচার হতে হবে নৈতিকতা ও আইন মেনে, জনতার হাতে ‘পাবলিক শেমিং’ নয়।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *