দেশে অপরাধী যত বড়ই হোক না কেন, তাকে আইনের আওতায় এনে বিচার করতে হবে—‘মব জাস্টিস’ কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। এমনটাই মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী (Ruhul Kabir Rizvi)। মঙ্গলবার (২৪ জুন) দুপুরে রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের (Ziaur Rahman) মাজারে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা বিএনপির নবগঠিত কমিটির পক্ষ থেকে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানাতে গিয়ে তিনি এই মন্তব্য করেন।
রিজভী বলেন, “গত তিনটি জাতীয় নির্বাচন ছিল শেখ হাসিনার (Sheikh Hasina) একক ও নাটকীয় নির্বাচন। সেই নির্বাচনগুলোর সময়কার নির্বাচন কমিশনাররাও ছিলেন ফ্যাসিবাদের অংশ। তবে তারা যত বড় অপরাধীই হোক, বিচারের পথ একটাই—আইন। কোনোভাবেই ‘মব জাস্টিস’ হতে পারে না, এটি সমর্থনযোগ্য নয়।”
তিনি আরও বলেন, “সরকারের এখন সবচেয়ে জরুরি দায়িত্ব হলো দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা এবং ‘মব জাস্টিসের’ মতো বেআইনি কর্মকাণ্ড সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করা। জনতার রোষে অভিযুক্তদের বিচার নয়—বিচার হোক আদালতের মাধ্যমে। আর যদি বিএনপির কারও বিরুদ্ধে ‘মব জাস্টিস’-এর সঙ্গে জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া যায়, তাহলে দলীয়ভাবেই তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
রিজভী প্রশ্ন তোলেন, “আদালতের মতো সংবেদনশীল স্থানে, যেখানে পুলিশি নিরাপত্তা থাকার কথা, সেখানেই কিভাবে কোনো আসামিকে জনতার হাতে হেনস্তা হতে হয়?”
তিনি জোর দিয়ে বলেন, “ভোটারবিহীন তিনটি নির্বাচনের দায় প্রাক্তন তিন প্রধান নির্বাচন কমিশনারের। তবে আমরা চাচ্ছি—তাদের বিচার হোক আইনি প্রক্রিয়ায়। প্রতিশোধ নয়, সুবিচার চাই।”
দেশে ফের করোনা সংক্রমণের আশঙ্কা উল্লেখ করে রিজভী বলেন, “আবারও করোনার প্রকোপ বাড়ছে। কিন্তু সরকার কোনো কার্যকর উদ্যোগ নিচ্ছে না। একই অবস্থা চলছে ডেঙ্গু পরিস্থিতি নিয়েও। স্বাস্থ্যখাত এখন প্রায় অকার্যকর, অথচ সরকারের কোনো তৎপরতা দেখা যাচ্ছে না।”
তিনি সরকারের প্রতি দ্রুত ও কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানান, বিশেষ করে স্বাস্থ্যখাতে, যাতে করে জনগণের জীবনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যায়।
শ্রদ্ধা নিবেদনের সময় উপস্থিত ছিলেন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যক্ষ সেলিম ভূঁইয়া, নির্বাহী কমিটির সদস্য তকদির হোসেন মোহাম্মদ জসিম, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা বিএনপির সভাপতি খালেদ মাহমুদ হোসেন শ্যামল, সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম সিরাজ, সহ-সভাপতি কৃষিবিদ মেহেদী হাসান পলাশ এবং যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বেলাল উদ্দিন সরকার তুহিনসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।
