দলীয় প্রতীক হিসেবে ‘শাপলা’ বরাদ্দ পেতে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নেমেছে দুই রাজনৈতিক দল—নাগরিক ঐক্য (Nagorik Oikya) ও জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। যদিও নাগরিক ঐক্যই প্রথম ‘শাপলা’ প্রতীক চেয়ে আবেদন করেছে, তবুও এনসিপির সক্রিয় আগ্রহ এই প্রতীককে ঘিরে তৈরি করেছে নতুন বিতর্ক।
মঙ্গলবার (২৪ জুন) নির্বাচন কমিশন (ইসি) সূত্রে জানা যায়, দুটি দলই নিবন্ধন অথবা প্রতীক পরিবর্তনের ক্ষেত্রে ‘শাপলা’কে প্রথম পছন্দ হিসেবে উল্লেখ করেছে। তবে, কে পাবে প্রতীকটি—সে সিদ্ধান্ত এখন কমিশনের হাতে।
নাগরিক ঐক্যের দপ্তর সম্পাদক মহিদুজ্জামান মহিদ জানান, “আমরা আমাদের বর্তমান প্রতীক ‘কেটলি’ পরিবর্তন করে ‘শাপলা’ বা ‘দোয়েল’ চেয়ে নির্বাচন কমিশনে আবেদন করেছি। তবে ইসি সচিব জানিয়েছেন, শাপলা ও দোয়েল জাতীয় প্রতীক হিসেবে বিবেচিত না হওয়ায় তা এখনই বরাদ্দ দেওয়া সম্ভব নয়। ভবিষ্যতে প্রতীক সংযোজনের সুযোগ এলে বিবেচনায় নেওয়া হবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন।”
মহিদ বলেন, “আমরাই প্রথম শাপলা প্রতীক চেয়ে আবেদন করেছি। এরপরও যদি এনসিপি এই প্রতীক পায়, তবে আমরা আশা করব নির্বাচন কমিশন নিরপেক্ষভাবে বিষয়টি বিবেচনা করবে। আগের আবেদনকারী হিসেবে আমাদেরই অগ্রাধিকার পাওয়া উচিত।”
এদিকে এনসিপি পক্ষ থেকেও শাপলা প্রতীক পাওয়ার পক্ষে জোরালো যুক্তি তুলে ধরা হয়েছে। ২২ জুন নিবন্ধনের আবেদন জমা দেওয়ার সময় দলটির আহ্বায়ক বলেন, “আমরা ‘শাপলা’, ‘কলম’ ও ‘মোবাইল’ প্রতীক চেয়ে আবেদন করেছি। আমাদের প্রথম পছন্দ ‘শাপলা’। এটি জনগণের প্রতীক, গণঅভ্যুত্থানের প্রতীক এবং গ্রামীণ জীবনের সঙ্গে সম্পৃক্ত একটি চিহ্ন। আমরা এই প্রতীক নিয়েই রাজনৈতিক ময়দানে নামতে চাই।”
এনসিপি নেতা নাহিদ ইসলাম আরও বলেন, “আমরা নির্বাচন কমিশনের আইনি বিধান বিশ্লেষণ করে দেখেছি, জাতীয় প্রতীক হিসেবে থাকলেও শাপলা বরাদ্দে কোনো সরাসরি নিষেধাজ্ঞা নেই। যেমন ‘কাঁঠাল’ জাতীয় ফল হয়েও একটি দলের প্রতীক। ধানের শীষ, পাটপাতা, তারকা—এসব প্রতীক তো আগে থেকেই রাজনৈতিক ব্যবহারে আছে। তাই শাপলা ব্যবহারে আইনি বাধা থাকার কথা নয়।”
এনসিপি ও নাগরিক ঐক্য দুই দলই আত্মবিশ্বাসী যে নির্বাচন কমিশন তাদের যুক্তি বিবেচনায় নেবে। তবে শেষ পর্যন্ত কার ঝুলিতে পড়বে ‘শাপলা’, তা নির্ধারণ করবে ইসির নীতিগত সিদ্ধান্ত এবং আগামীর রাজনীতির চাপ।