রাষ্ট্রের মূলনীতি নিয়ে এখনো কোনো ঐকমত্যে পৌঁছাতে পারেনি দেশের রাজনৈতিক দলগুলো। জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের উদ্যোগে দ্বিতীয় দফার ষষ্ঠ দিনের বৈঠকে এ নিয়ে বিস্তর আলোচনা হলেও, অভিন্ন অবস্থান গড়ে ওঠেনি। বিভিন্ন দলের ভিন্ন ভিন্ন মতামত স্পষ্ট হয়ে উঠেছে এদিনের আলোচনায়।
রাজধানীর বেইলি রোডে অবস্থিত ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত এই বৈঠকে রাষ্ট্রের মূলনীতি, জাতীয় সাংবিধানিক কাউন্সিল (এনসিসি), এবং প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা হয়।
গণসংহতি আন্দোলন (Ganosamhati Andolon) দলের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি (Jonaed Saki) বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের জানান, রাষ্ট্রের মূলনীতি নিয়ে এখনো রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্য আসেনি। তিনি বলেন, “সংবিধানের মূলনীতিতে কোন বিষয়গুলো অবশ্যই থাকতে হবে, তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। আমাদের পক্ষ থেকে সাম্য, মানবিক মর্যাদা, সুবিচার, গণতন্ত্র, ধর্মীয় স্বাধীনতা ও সম্প্রীতি, এবং রাষ্ট্রের পক্ষপাতহীনতা এই বিষয়গুলো প্রস্তাব করেছি।”
অন্যদিকে, বিএনপি (BNP)-র স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ (Salahuddin Ahmed) বলেন, বিএনপি পঞ্চম সংশোধনীর মূলনীতি বহাল দেখতে চায়। যেখানে ‘বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম’ এবং ‘আল্লাহর ওপর পূর্ণ আস্থা ও বিশ্বাস’ অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। একইসঙ্গে কমিশনের প্রস্তাবনায় থাকা সাম্য, মানবিক মর্যাদা, সামাজিক সুবিচার, গণতন্ত্র এবং ধর্মীয় স্বাধীনতা ও সম্প্রীতির মতো বিষয়গুলো যুক্ত করারও পক্ষে দলটি।
এদিকে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি -র সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক (Saiful Haque) বলেন, “রাষ্ট্রের মূলনীতি কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর সিদ্ধান্ত নয়। এটি এসেছে আমাদের দীর্ঘ গণতান্ত্রিক আন্দোলন এবং মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা থেকে। গণ–আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন হিসেবেই এগুলো সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে।” তাঁর মতে, এই মূলনীতি বহাল রাখা উচিত এবং তা সংবিধানের অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবেই বিবেচিত হওয়া প্রয়োজন।
বৈঠকটি জাতীয় ঐকমত্য প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে আয়োজিত হলেও মূলনীতির মতো মৌলিক বিষয়ে একমত না হওয়ায় আলোচনা কতটা সফল হয়েছে, সে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।