ময়মনসিংহের ক্যাপিটাল কলেজের অধ্যক্ষ এবং স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক নেতা মনোয়ার হোসেন খান মিনার (Monowar Hossain Khan Minar)–কে সেনাবাহিনী আটক করেছে। বুধবার (২৫ জুন) বিকেলে নগরীর রামবাবু রোডে অবস্থিত ক্যাপিটাল কলেজে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। অভিযানে নেতৃত্ব দেন সেনাবাহিনীর ময়মনসিংহ সদর ক্যাম্পের কমান্ডার মেজর জায়েদ সাদ আল রাব্বি।
সেনাবাহিনীর দাবি, গোপন গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে জানা যায়, মিনার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিভিন্ন অ্যাপ ব্যবহার করে রাজনৈতিক কর্মীদের উজ্জীবিত ও সংগঠিত করার চেষ্টা করছিলেন। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে দলীয় কর্মকাণ্ড পুনরুজ্জীবনের পরিকল্পনায় সক্রিয় থাকার। এ সংক্রান্ত প্রমাণ সংগ্রহের লক্ষ্যে তার মোবাইল ফোনসহ একাধিক ডিভাইস জব্দ করা হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাকে কোতোয়ালি মডেল থানায় হস্তান্তর করা হয়।
তবে আটক হওয়ার পর মিনার তার অবস্থান ব্যাখ্যা করে বলেন, “আমি আওয়ামী লীগ করি, বঙ্গবন্ধুর আদর্শে রাজনীতি করি। কিন্তু সরকার ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় আমি কোনও সুযোগ-সুবিধা নেইনি, এমনকি কোনো পদও পাইনি। ২০২০ সাল থেকে আমি সক্রিয় রাজনীতি থেকে দূরে। এখনও দলীয় কোনো কার্যক্রমে জড়িত না।”
তিনি আরও বলেন, “আমাকে কেন আটক করা হয়েছে, আমি জানি না। যদি আওয়ামী লীগ করা আমার দোষ হয়, তাহলে আমি যেকোনো শাস্তি মাথা পেতে নিতে প্রস্তুত আছি।”
ঘটনাটি নিয়ে এলাকায় বেশ চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। ক্যাপিটাল কলেজের একাধিক শিক্ষার্থী ও সহকর্মী বিষয়টি ‘অপ্রত্যাশিত’ বলে উল্লেখ করেছেন। অনেকেই বিশ্বাস করতে পারছেন না যে একজন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধান, যিনি কয়েক বছর ধরে রাজনীতির বাইরে রয়েছেন, এমন অভিযোগে গ্রেপ্তার হতে পারেন।
এদিকে, সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এই অভিযান একটি বৃহত্তর তদন্তের অংশ এবং প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। মিনারের রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা এবং প্রযুক্তিগত যোগাযোগের উৎস খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলেও জানিয়েছেন মেজর জায়েদ।
ঘটনার পর স্থানীয় রাজনৈতিক মহলে নানান আলোচনা শুরু হয়েছে। কেউ বলছেন এটি রাজনৈতিক হয়রানির একটি দৃষ্টান্ত, কেউ আবার বলছেন রাষ্ট্রবিরোধী কোনও কর্মকাণ্ডে যুক্ত থাকার প্রমাণ থাকলে আইন তার নিজস্ব পথে চলবে।