ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হবে কি না, বিদেশ থেকে সে প্রশ্ন করা হয় : অর্থ উপদেষ্টা

জাতীয় নির্বাচন নির্ধারিত সময়ে হবে কি না—এই প্রশ্ন এখন কেবল দেশের অভ্যন্তরে সীমাবদ্ধ নেই, বিদেশ থেকেও এমন জিজ্ঞাসা আসছে বলে জানিয়েছেন অর্থ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ (Salehuddin Ahmed)। বুধবার সচিবালয়ে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, “আমি যখন ওয়ার্ল্ড ব্যাংক (World Bank)-এ যাই, তখন ওরাও জানতে চায় ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হবে কি না। আমি বলেছি, হবে।”

রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার ওপর অর্থনীতির গতি নির্ভর করে উল্লেখ করে তিনি বলেন, “রাজনীতি হচ্ছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এখন এমন কিছু ঘটেনি যে নির্বাচন হবে না। বরং এখন মোটামুটি সবাই একমত, একটা সময় ঠিক হয়েছে নির্বাচন কবে হবে। সবাই মোটামুটি সন্তুষ্ট। রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা থাকলেও তা সংকটের পর্যায়ে নয়।”

ব্যবসায়ীদের আস্থা এবং বিনিয়োগের ধারা

অর্থনৈতিক পরিস্থিতি ও বিনিয়োগ পরিস্থিতি নিয়ে ড. সালেহউদ্দিন বলেন, “ব্যবসায়ীদের আস্থা ফিরিয়ে আনতে আমরা কাজ করছি। তবে মোটামুটি একটা আস্থা আছে। আমরা যখন ফরেন এক্সচেঞ্জ ওপেন করি, অর্থাৎ ডলারের দর বাজার নির্ধারণ করতে দিই, তখন আমাদের অনেক টেনশন ছিল। পাকিস্তানের মতো অবস্থা হবে কি না, সেই আশঙ্কাও ছিল। তবে সেগুলো ঘটেনি।”

বৈদেশিক বিনিয়োগের বিষয়ে তিনি বলেন, বর্তমানে বিদেশি বিনিয়োগ কিছুটা ধীরগতিতে চললেও রিজার্ভের স্থিতিশীলতা এবং নীতিমালার স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা গেলে বিনিয়োগ বাড়বে। “বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ এখন একটু বেড়েছে। রেগুলেটরিটি ঠিক থাকলে নিশ্চিতভাবেই বিনিয়োগ আসবে,” বলেন তিনি।

গম আমদানিতে সাশ্রয়, খাদ্য নিরাপত্তা জোরদার

বৈঠকে সরকারি গম আমদানির সিদ্ধান্ত প্রসঙ্গে তিনি জানান, “ফরচুনেটলি গমের দাম এখন কমে গেছে। ৫০ হাজার টন গম কেনার এই প্রক্রিয়ায় ১৮ থেকে ২০ কোটি টাকা সাশ্রয় হবে। দেশে চাল-গমের রিজার্ভ সন্তোষজনক অবস্থায় আছে, তবে খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আমরা আগাম ব্যবস্থা নিচ্ছি।”

হরমুজ প্রণালীর উত্তেজনা ও জ্বালানি সাশ্রয়

ইরান (Iran)-ঘেঁষা হরমুজ প্রণালীতে সাম্প্রতিক উত্তেজনার পরেও দেশের অর্থনীতিতে কোনো নেতিবাচক প্রভাব পড়েনি বলেও জানান ড. সালেহউদ্দিন। “যুদ্ধ চলাকালীন জ্বালানি কেনায় বরং সাশ্রয় হয়েছে। যুদ্ধের আগে যে দামে কেনা হতো, যুদ্ধ পরবর্তী টেন্ডারে আমরা ৫ থেকে ১০ ডলার কমে জ্বালানি পেয়েছি। এতে ৭০ থেকে ৮০ কোটি টাকা সাশ্রয় হয়েছে। এটা এনার্জি মিনিস্ট্রির কৃতিত্ব,” তিনি বলেন।

তবে মরক্কো ও তিউনিশিয়া থেকে আমদানিকৃত সারের দামে কিছুটা বৃদ্ধি ঘটেছে। “এখানে কিছু করার ছিল না,” বলে উল্লেখ করেন অর্থ উপদেষ্টা।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *