জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (Jahangirnagar University)–এ পুনরায় অটোরিকশা চালুর দাবিতে চলমান আন্দোলনে আবারও আলোচনায় উঠে এসেছেন বিতর্কিত ছাত্রলীগ কর্মী মো. মাহফুজ গাজী। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বাসভবনে গত বছরের জুলাইয়ে সংঘটিত হামলার ঘটনায় অভিযুক্ত মাহফুজ এবার আন্দোলনের সামনের সারিতে দেখা যাওয়ায় প্রশ্ন উঠেছে আন্দোলনের স্বচ্ছতা ও উদ্দেশ্য নিয়ে।
বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন প্রশাসনিক ভবনের কাউন্সিল কক্ষে অনুষ্ঠিত এক ভিডিও ও স্থির চিত্র প্রদর্শনীতে মাহফুজ গাজীকে গত বছরের ১৪, ১৫ ও ১৭ জুলাইয়ের হামলার সময় সক্রিয় অংশগ্রহণকারী হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। প্রদর্শনীতে উপস্থিত একাধিক শিক্ষার্থী নিশ্চিত করেছেন, তৎকালীন ফুটেজে সবুজ টি-শার্ট পরিহিত অবস্থায় দেখা যাওয়া ব্যক্তি এবং চলতি অটোরিকশা আন্দোলনে একই রঙের টি-শার্ট পরা মাহফুজ গাজী একই ব্যক্তি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সরকার ও রাজনীতি বিভাগের ৫০তম ব্যাচের শিক্ষার্থী মাহফুজ গাজী বর্তমানে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম হলে বসবাস করছেন। পূর্বে তিনি শহিদ সালাম-বরকত হলের আবাসিক ছাত্র ছিলেন এবং নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের সক্রিয় কর্মী হিসেবেই পরিচিত ছিলেন।
চলতি বছরের ২৫ জুনের আন্দোলনে মাহফুজ গাজীকে আবারও সামনের সারিতে দেখা যায়। এসময় কমনওয়েলথ প্রতিনিধি দল, ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী এবং সাংবাদিকদের বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনে আটকে রাখেন তিনি ও তার অনুসারীরা। ঘটনার এমন পুনরাবৃত্তিতে সংশ্লিষ্ট শিক্ষার্থীদের অনেকেই উদ্বেগ প্রকাশ করছেন—বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা নষ্ট করতে আবারও ক্যাম্পাসে তৎপর হয়ে উঠেছে নিষিদ্ধ সংগঠনের সদস্যরা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান ও উপাত্ত বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী জিহাদুল ইসলাম বলেন, “জাকসু নির্বাচনের ঘোষণা আসার পর অনেকেই সাধারণ শিক্ষার্থীদের আড়ালে থেকে আন্দোলনের নামে ক্যাম্পাসকে উত্তপ্ত করার চেষ্টা করছে। তাই প্রশাসন ও শিক্ষার্থীদের আরও বেশি সচেতন হতে হবে।”
এদিকে অভিযুক্ত ছাত্র মাহফুজ গাজী সম্পর্কে পরবর্তী করণীয় প্রসঙ্গে অধিকতর তদন্ত কমিটির প্রধান ও বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. আব্দুর রব বলেন, “উক্ত শিক্ষার্থীকে আমরা কারণ দর্শানোর নোটিশ প্রদান করব আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দিতে।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের শান্তিপূর্ণ পরিবেশ এবং আন্দোলনের প্রকৃত উদ্দেশ্য রক্ষা করতে প্রশাসনের দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছেন সচেতন শিক্ষার্থীরা।