ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে প্রশাসনিক রদবদলে নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে যাচ্ছে সরকার। এবারের নির্বাচনের আগে ডিসি (জেলা প্রশাসক), এসপি (পুলিশ সুপার), ওসি এবং টিএনওদের (উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা) বদলি লটারির মাধ্যমে র্যান্ডম পদ্ধতিতে করার ভাবনা উঠে এসেছে। এমন এক সিদ্ধান্তের কথা বুধবার (৯ জুলাই) রাতে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেসসচিব শফিকুল আলম (Shafiqul Alam)।
সংবাদ সম্মেলনে আরও জানানো হয়, প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেসসচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার (Abul Kalam Azad Majumder) জানিয়েছেন, “বদলি পদ্ধতিটি নম্বরিং করে লটারির মাধ্যমে করার কথা বলা হয়েছে, যেন কেউ আগাম প্রভাব বিস্তার করতে না পারে।”
এই প্রক্রিয়া বাস্তবায়নযোগ্য কিনা তা নিয়ে ভাবতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা। উদ্দেশ্য একটাই—নির্বাচনের পূর্ব মুহূর্তে প্রশাসনকে নিরপেক্ষ এবং প্রভাবমুক্ত রাখা।
প্রেসসচিব শফিকুল আলম জানান, নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর ৮ লাখ সদস্য মাঠে থাকবে এবং তাদের সকলকে প্রশিক্ষণ দিয়ে প্রস্তুত রাখতে হবে ডিসেম্বরের মধ্যেই। তিনি বলেন, “নির্বাচন যেন শান্তিপূর্ণ হয়, এটাই এখন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।”
এদিনের বৈঠকে একটি গুরুত্বপূর্ণ সামাজিক প্রস্তাবও আলোচনায় আসে। প্রধান উপদেষ্টা ইঙ্গিত দিয়েছেন, দীর্ঘদিন ধরে তরুণ প্রজন্ম ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত। তাই ১৮ থেকে ৩৩ বছর বয়সী তরুণদের জন্য আলাদা ভোটার তালিকা তৈরি সম্ভব কিনা, তা খতিয়ে দেখতে বলা হয়েছে। এমনকি তাদের জন্য স্বতন্ত্র বুথ স্থাপনের সম্ভাবনাও পর্যালোচনার আওতায় আসবে।
শফিকুল আলম আরও বলেন, “আমাদের তরুণরা গত তিনটি নির্বাচনে ভোটই দিতে পারেনি। এবার তারা যেন ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারে, সে ব্যবস্থা নিতে চায় সরকার।”
ভোট সামনে রেখে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি যাতে নিয়ন্ত্রণে থাকে এবং কেউ বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে না পারে, সে বিষয়ে কঠোর নজরদারির নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা (Chief Advisor)। নির্বাচনকালীন সময়জুড়ে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে কঠোরভাবে দায়িত্ব পালনের নির্দেশও দিয়েছেন তিনি।