বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে সংঘটিত ‘জুলাই গণহত্যা’ মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা (Sheikh Hasina), সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল (Asaduzzaman Khan Kamal) এবং সাবেক পুলিশ মহাপরিদর্শক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন (Chowdhury Abdullah Al-Mamun)-এর বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিকভাবে অভিযোগ গঠন করেছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ (International Crimes Tribunal-1) মামলায় অভিযোগ গঠনের আদেশ দেন। ট্রাইব্যুনালের অপর দুই সদস্য ছিলেন বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ এবং বিচারক মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।
ট্রাইব্যুনালে চাঞ্চল্যকর এক সাক্ষ্য দিয়েছেন কারাবন্দি সাবেক আইজিপি মামুন। আদালতে দাঁড়িয়ে তিনি স্বীকার করেছেন, “আমি জুলাই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত।” এই স্বীকারোক্তির ফলে তিনি এখন মামলার রাজসাক্ষী। তার এই ভূমিকা মামলার গতিপথ বদলে দিতে পারে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
এই মামলায় প্রধান প্রসিকিউটরের দায়িত্বে ছিলেন মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। অপরদিকে, যেহেতু শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান বর্তমানে পলাতক, তাদের পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী হিসেবে শুনানিতে অংশ নেন অ্যাডভোকেট মো. আমির হোসেন।
উল্লেখযোগ্যভাবে, ৭ জুলাই মামলাটির অভিযোগ গঠনের বিষয়ে শুনানি শেষে আদেশের জন্য ১০ জুলাই দিন ধার্য করেছিলেন আদালত। বৃহস্পতিবার সেই রায়ের মধ্য দিয়ে তিন আসামির বিচারিক প্রক্রিয়া আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়। যদিও শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খানের পক্ষে তাদের অব্যাহতির আবেদন করা হয়, আদালত তা খারিজ করে দেন।
এর ফলে, বহুল আলোচিত ও ঐতিহাসিক ‘জুলাই গণহত্যা’ মামলায় তিন শীর্ষ ব্যক্তির বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ আইনে বিচার কার্যক্রম শুরু হলো। মামলাটিকে ঘিরে রাজনৈতিক অঙ্গনে চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়েছে। একদিকে সাবেক আইজিপির স্বীকারোক্তি, অন্যদিকে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বিরুদ্ধে সরাসরি অভিযোগ গঠন—সব মিলিয়ে দেশজুড়ে উত্তেজনা তৈরি হয়েছে।