জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদের আঞ্চলিক কার্যালয় ঢাকায় স্থাপনের সিদ্ধান্তের তীব্র বিরোধিতা করে বিক্ষোভের ঘোষণা দিয়েছে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ (Hefazat-e-Islam Bangladesh)। সংগঠনটির দাবি, এই সিদ্ধান্ত দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপের শামিল এবং তা সরাসরি বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বকে হুমকির মুখে ফেলবে।
আগামীকাল শুক্রবার (১১ জুলাই) বাদ জুমা রাজধানীর জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররম (Baitul Mukarram)-এর উত্তর গেটে ঢাকা মহানগর হেফাজতের উদ্যোগে এক বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশের আয়োজন করা হয়েছে। সংগঠনটির ঢাকা মহানগর সভাপতি মাওলানা জুনায়েদ হাবিব এবং সাধারণ সম্পাদক মাওলানা মামুনুল হক এক যৌথ বিবৃতিতে এই কর্মসূচিতে সকল ঈমানদার, দেশপ্রেমিক ও স্বাধীনতাকামী নাগরিকদের দলমত নির্বিশেষে অংশগ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন।
হেফাজতের ভাষ্য মতে, কওমি মাদরাসাভিত্তিক এই সংগঠন দীর্ঘদিন ধরেই দেশের ধর্মীয় ও সামাজিক মূল্যবোধ রক্ষায় সোচ্চার, আর জাতিসংঘের এই কার্যালয় স্থাপন সেই মূল্যবোধে হস্তক্ষেপ করার আশঙ্কা তৈরি করছে। সংগঠনটি এটিকে ‘বিদেশি হস্তক্ষেপ’ এবং ‘স্বাধীন রাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে নগ্ন অনুপ্রবেশ’ হিসেবে চিহ্নিত করছে।
অন্যদিকে, সরকারি প্রক্রিয়ায় এই কার্যালয় স্থাপনের প্রেক্ষাপটও সামনে এসেছে। বৃহস্পতিবার উপদেষ্টা পরিষদের এক বৈঠকে ঢাকায় জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের কার্যালয়ের মিশন স্থাপন সংক্রান্ত সমঝোতা স্মারকের খসড়ায় চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ (Cabinet Division)-এর এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, জাতিসংঘের আওতায় থাকা ‘নির্যাতন এবং অন্যান্য নিষ্ঠুর, অমানবিক বা মর্যাদাহানিকর আচরণ বা শাস্তির বিরুদ্ধে কনভেনশন’-এর একটি ঐচ্ছিক প্রটোকলের অংশ হিসেবে এই মিশন প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। প্রটোকলটি ২০০২ সালে জাতিসংঘে গৃহীত হয় এবং এর মূল লক্ষ্য হলো বিশ্বব্যাপী নির্যাতনের বিরুদ্ধে প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থাগুলো জোরদার করা।
সরকারি ভাষ্য অনুযায়ী, এই অফিসটি মানবাধিকার সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুসরণে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে এবং বাংলাদেশে মানবাধিকার পরিস্থিতির উন্নয়নে সহায়তা করবে। তবে হেফাজতসহ বিভিন্ন ধর্মীয় ও রক্ষণশীল মহলে বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে।