সালাহউদ্দিন আহমদ (Salahuddin Ahmed), বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য, গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) কর্মসূচিতে হামলার ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে দলটির বর্তমান রাজনৈতিক কৌশল নিয়ে কঠোর প্রশ্ন তুলেছেন। আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে আয়োজিত বিক্ষোভ মিছিলপূর্ব সমাবেশে তিনি এসব মন্তব্য করেন।
জাতীয়তাবাদী যুবদল (Jatiyatabadi Jubo Dal) আয়োজিত এই সমাবেশে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি এবং অন্তর্বর্তী সরকারের ‘নিষ্ক্রিয়তা’র প্রতিবাদ জানানো হয়। বক্তব্যে সালাহউদ্দিন বলেন, “আমরা কখনোই প্রত্যাশা করি না যে ফ্যাসিবাদী পতিত শক্তি—সে গোপালগঞ্জে হোক কিংবা অন্য কোথাও—গণ-অভ্যুত্থানের শক্তির ওপর আক্রমণ চালাতে সাহস পাবে।”
কিন্তু এর পেছনের কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে তিনি সরাসরি ইঙ্গিত করেন, “যারা এখনো নিবন্ধনহীন নতুন রাজনৈতিক দল গঠন করেছে, তারা আবেগপ্রবণ হয়ে অপরিকল্পিতভাবে রাজনৈতিক কর্মসূচি দিচ্ছে। ফলে ফ্যাসিবাদী শক্তিরা সেই সুযোগ কাজে লাগিয়ে গণ-আন্দোলনের ওপর হামলা চালাচ্ছে।”
এনসিপি নেতাদের উদ্দেশে বিএনপির এই জ্যেষ্ঠ নেতা বলেন, “বাবারা, রাজনীতির মাঠে অভিজ্ঞতা সঞ্চয়ের জন্য আগেও বলেছি, আজও বলছি। তোমাদের জন্য আমাদের শুভকামনা আছে। গণতন্ত্র রক্ষায় ভবিষ্যতে তোমরা বড় অবদান রাখবে, জাতীয় নেতৃত্বেও আসবে—এই প্রত্যাশা আমাদের। কিন্তু এখন যেভাবে কর্মসূচি হচ্ছে, তাতে একটা বার্তা পাচ্ছি, যেন পরিকল্পিতভাবে এমন একটা পরিস্থিতি তৈরি করা হচ্ছে, যাতে বলা যায় সরকার কোনো কিছুই নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারছে না। এমন প্রশ্ন তুলে কেউ যেন বলতে না পারে—এই সরকার নির্বাচন কীভাবে দেবে?”
তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে আরও বলেন, “রাজনৈতিক বক্তব্য দেওয়ার আগে ইতিহাস জেনে বলা দরকার। বাংলাদেশের মানুষ এখন অনেক সচেতন, তাই শব্দচয়ন এবং কর্মসূচি প্রণয়নে অত্যন্ত সাবধানতা দরকার।”
সালাহউদ্দিন আহমদ জাতীয় ঐক্য ধরে রাখার ওপর জোর দেন এবং বলেন, “ফ্যাসিবাদী শক্তির উদ্দেশ্যই হচ্ছে গণতান্ত্রিক জোটের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করা। তাই গণতন্ত্রের উত্তরণে গঠিত জাতীয় ঐক্যকে যেকোনো মূল্যে রক্ষা করতে হবে।”
নেতিবাচক রাজনীতি পরিহার করে দায়িত্বশীল রাজনৈতিক চর্চার আহ্বান জানিয়ে তিনি এনসিপির উদ্দেশে আবারও বলেন, “তোমরা নেতৃত্বে আসবে—এই প্রত্যাশা রাখি, কিন্তু পদক্ষেপ হতে হবে হিসেব করে, যেন তা বৃহত্তর গণতান্ত্রিক আন্দোলনের ক্ষতি না করে।”