রাজধানীর গুলশানে সংঘটিত এক চাঞ্চল্যকর চাঁদাবাজির ঘটনায় জড়িত থাকার দায়ে গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ (Democratic Student Council)-এর দুই কেন্দ্রীয় নেতাকে সংগঠন থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে। চাঁদাবাজির ঘটনায় মূল অভিযুক্ত হিসেবে নাম এসেছে আব্দুর রাজ্জাক বিন সুলাইমান রিয়াদ ও জানে আলম অপুর।
শনিবার (২৬ জুলাই) সন্ধ্যার পর গুলশানের ৮৩ নম্বর রোডে ঘটেছে এই ঘটনাটি। অভিযোগে বলা হয়েছে, সংরক্ষিত আসনের সাবেক সংসদ সদস্য শাম্মী আহমেদ (Shammi Ahmed)-এর কাছ থেকে “সমন্বয়ক” পরিচয়ে ১ কোটি টাকা চাঁদা দাবি করা হয়। পরে চাঁদাবাজ দলের সদস্যরা ১০ লাখ টাকা নেওয়ার সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে গ্রেপ্তার হন।
গ্রেপ্তার হওয়া পাঁচজনের মধ্যে রিয়াদ ও অপু ছিলেন গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের গুরুত্বপূর্ণ নেতৃত্বে। রিয়াদ ছিলেন সদস্য এবং জানে আলম অপু ছিলেন সংগঠনের কেন্দ্রীয় যুগ্ম আহ্বায়ক। ঘটনার পর রাতে গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ পৃথক দুটি জরুরি নোটিশে তাদের বহিষ্কারের ঘোষণা দেয়।
নোটিশে জানানো হয়, সংগঠনের গঠনতন্ত্রের ধারা ৩.১ অনুযায়ী, সংগঠনের ভাবমূর্তি ও শৃঙ্খলার পরিপন্থী কার্যকলাপে সরাসরি জড়িত থাকার সুস্পষ্ট প্রমাণ পাওয়ায় কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক আবু বাকের মজুমদার এবং সদস্য সচিব জাহিদ আহসানের নির্দেশে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। একইসঙ্গে সংগঠনটি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী (Law Enforcement Agencies)-কে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে।
ঘটনাটিকে কেন্দ্র করে আরেক ছাত্র সংগঠন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন (Anti-Discrimination Student Movement) থেকেও ৩ নেতাকে স্থায়ী বহিষ্কার করা হয়েছে। সংগঠনটির প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ঢাকা মহানগর শাখার আহ্বায়ক ইব্রাহিম হোসেন মুন্না, সদস্য মো. সাকাদাউন সিয়াম ও সাদাবকে সাংগঠনিক শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে পদচ্যুত করা হয়েছে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সভাপতি রিফাত রশিদ ও সাধারণ সম্পাদক হাসান ইনামের অনুমোদনে এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হয়। একইসঙ্গে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, বহিষ্কৃতদের সঙ্গে সংগঠনের কোনো নেতা-কর্মী যেন ভবিষ্যতে কোনো সাংগঠনিক সম্পর্ক না রাখে।
চাঁদাবাজির এমন ঘটনা ও এর সঙ্গে ছাত্রনেতাদের প্রত্যক্ষ জড়িত থাকার বিষয়টি ছাত্র রাজনীতিতে গভীর উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। শিক্ষাঙ্গনে রাজনৈতিক সংগঠনের ভাবমূর্তি ও নৈতিক অবস্থান নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন উঠেছে।