‘চোরের দল রেখে সব কমিটি বাদ’—চাঁদাবাজি ইস্যুতে ক্ষোভে ফেটে পড়লেন আবদুন নূর তুষার

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কিছু নেতাকর্মীর চাঁদাবাজির অভিযোগে গ্রেপ্তার ও পরবর্তী পদক্ষেপে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন বিশিষ্ট গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব ও চিকিৎসক আবদুন নূর তুষার (Abdun Noor Tushar)। সম্প্রতি একটি বেসরকারি টেলিভিশনের টকশোতে অংশ নিয়ে তিনি বলেন, “চাঁদাবাজি করতে গিয়ে কেন্দ্রীয় কমিটির লোক ধরা পড়েছে, অথচ কেন্দ্রীয় কমিটিকে রেখে দেশের সব বৈষম্যবিরোধী কমিটি বাতিল করা হয়েছে—এর মানে দাঁড়ায়, চোরের দল রেখে সব কমিটি বাদ দেওয়া হয়েছে।”

চাঁদাবাজির ঘটনায় গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিরা যারা ২০২৪-এর গণভুত্থানে সম্মুখ সারির যোদ্ধা ছিলেন, তারা এখন সমন্বয়কের পরিচয়ে কিস্তিতে চাঁদা তুলছেন—এই বাস্তবতায় হতাশ তুষার বলেন, “চাঁদা তুলছে একজন, দায় নেবে আরেকজন—এটা কি কোনো বিচার? যেমন চুরি করলে দায় চোরের, তেমনি চাঁদা তুললে দায়ও তারই।”

তিনি মনে করেন, এই অভিযোগগুলো কেবল ব্যক্তি পর্যায়ে সীমাবদ্ধ নয়—বরং রাষ্ট্রীয় কাঠামোতেও তার প্রভাব পড়ছে। তিনি বলেন, “পুলিশকে অন্য থানার থেকে এনে তাদের রক্ষা করতে হচ্ছে। তারা যেখানে সভা করবে, সেখানে বিদ্যুৎ যেন না যায়—এই ধরনের চিঠিও দিতে হচ্ছে। এটা কি কোনো বিশেষ সুবিধা নয়? আর এই সুবিধা কি অন্য রাজনৈতিক দলগুলো পাচ্ছে? না।” তার মতে, “এটা কেবল বরফের ওপরে দেখা যাচ্ছে এমন অংশ—বরফের ১১ ভাগ নিচে ডুবে আছে।”

তুষার বলেন, “এই চাঁদাবাজির ঘটনা নতুন নয়। মানুষজনের বাড়িতে ঢুকে জুতা, জামা থেকে শুরু করে মূল্যবান বস্তু নিয়ে যাওয়ার নজির আছে। অথচ তখন এই সরকার ও তাদের লোকজন বলেছে, এটা ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ, এক ধরনের সেলিব্রেশন। এখন সেই সেলিব্রেশন গিয়ে ঠেকেছে ৫০ লাখ টাকায়। তাহলে এখন কেন অভিযোগ উঠল?”

গ্রেপ্তার হওয়া নেতাদের রিমান্ডে নেওয়া প্রসঙ্গে তুষার প্রশ্ন তোলেন, “ব্যাংক থেকে যাদের কোটি কোটি টাকা লুট হয়েছে, তাদের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে? তাহলে ৫০ লাখ টাকার জন্য এই কঠোরতা কেন? এটা তো ‘মশা মারতে কামান ব্যবহারের’ মতো।”

তিনি অতীত স্মরণ করে বলেন, “একসময় এই দল ফেসবুকে অভিযোগ করত, কোথাও ৫০০ বা ১০০০ টাকা চাঁদা উঠলেই বলা হতো—তারেক রহমান লন্ডন থেকে ব্যবস্থা নেবেন। অথচ এখন নিজেদের চাঁদাবাজি বন্ধ করতে পারছে না—এটা খুব হতাশাজনক।”

তুষার আক্ষেপ করে বলেন, “হাজার হাজার মানুষ রক্ত দিয়েছে, অথচ এখন সেই ত্যাগের বিনিময়ে গড়ে উঠেছে এক নতুন লুটেরা সমাজ। যাদের বয়স এখনও ৩০-৩৫ হয়নি, তারাই এখন চাঁদাবাজি করছে। তাহলে ভবিষ্যৎ কেমন হবে?”

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *