বাংলাদেশে নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু নির্বাচন কোনোভাবেই সম্ভব নয় পিআর (Proportional Representation) পদ্ধতি ছাড়া— এমন মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার (Professor Mia Golam Porwar)। তিনি স্পষ্ট করে বলেন, দেশের প্রেক্ষাপটে উপযোগী যেকোনো একটি পদ্ধতি বেছে নিয়ে প্রস্তাবিত ‘আপার হাউজ’ ও ‘লোয়ার হাউজ’— দুই কক্ষেই পিআর পদ্ধতি চালু করতে হবে। নচেৎ, যারা ঐকমত্য কমিশনে পিআরের পক্ষে, জুলাই সনদের পক্ষে এবং গণহত্যার বিচারের দাবিতে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে, তারা আন্দোলনে নামতে বাধ্য হবে। ইসলামী ও দেশপ্রেমিক দলগুলোকে সাথে নিয়ে এই আন্দোলন অব্যাহত থাকবে যতক্ষণ পর্যন্ত দাবি পূরণ না হয়।
সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর জুরাইন রেলগেট সংলগ্ন বিক্রমপুর প্লাজা চত্বরে ঢাকা-৪ আসনে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের গণসমাবেশে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি এ ঘোষণা দেন। দেশবাসীর উদ্দেশে তিনি সরাসরি আহ্বান জানান— “আপনারা আন্দোলনের প্রস্তুতি গ্রহণ করুন।” তিনি আরও বলেন, সংস্কার কমিশনে পিআর পদ্ধতি ও বিচারের দাবি এবং জুলাই সনদের ভিত্তিতে আগামী ফেব্রুয়ারিতেই জাতীয় নির্বাচনের দাবি তুলেছে বিভিন্ন পক্ষ। এরই ধারাবাহিকতায় সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে।
গণসমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির মুফতী সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম (Mufti Syed Muhammad Rezaul Karim), যিনি পীর সাহেব চরমোনাই নামেও পরিচিত। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ইসলামী আন্দোলনের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও ঢাকা-৪ আসনের সংসদ সদস্য প্রার্থী প্রিন্সিপাল মাওলানা সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানী।
বক্তব্যে গোলাম পরওয়ার বিস্ময় প্রকাশ করে বলেন, দেশের বড় রাজনৈতিক দলের এক স্থায়ী কমিটির সদস্য প্রকাশ্যে প্রশ্ন তোলেন— “পিআর কী খায়, নাকি মাথায় দেয়?” আবার কেউ বলছেন, দেশের মানুষ ইভিএম বোঝে না, তাই পিআরও বুঝবে না। এই ধরনের মন্তব্যে তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তার অভিযোগ, ক্ষমতায় যাওয়ার আগেই যারা দোকানপাট, টেম্পুস্ট্যান্ড ও বাজারঘাট দখল করে বসেছেন, তারাই জোর করে ক্ষমতায় যাওয়ার পরিকল্পনার অংশ হিসেবে জুলাই সনদের আইনগত বাস্তবায়নকে বিলম্বিত করছেন।
তিনি অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, প্রথমে জুলাই ঘোষণাপত্র সংশোধন করতে হবে, এরপর সনদ তৈরি করে সেটিকে আইনিভিত্তি দিতে হবে। সেই ভিত্তিতেই ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচন আয়োজন করতে হবে।
ইসলামী আন্দোলনের আমিরকে শুভেচ্ছা জানিয়ে জামায়াতের এই শীর্ষ নেতা বলেন, রাজনৈতিক সংকটময় সময়ে ইসলামী দলগুলোর ঐক্যের কাণ্ডারি হিসেবে তিনি অসাধারণ ভূমিকা রেখেছেন। জনগণ ইসলামী নেতৃত্বের পাশে থাকবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
এ ছাড়াও গণসমাবেশে বক্তব্য রাখেন জামায়াতের কর্মপরিষদ সদস্য অধ্যক্ষ মাওলানা খলিলুর রহমান মাদানী।
উল্লেখ্য , পিআর ইস্যু নিয়ে সংস্কার কমিশনের সাথে কোন বৈঠকেই জামায়াত কথা তোলেনি, এমনকি সংস্কার কমিশনের আলোচনার মধ্যেও পিআর বিষয়টি ছিলো না, তথাপি পি আরের মত বির্তকিত বিষয় নিয়ে এই মূহুর্তে জামায়াত ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের চেষ্টা করছে এমন একটি সময়ে যেসময়ে আ’লীগ ও ভারতও ড.ইউনুসের নেতৃত্বে নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্রে নেমেছে।