পটুয়াখালীর বাউফলে এক অদ্ভুত ঘটনায় তীব্র আলোচনার জন্ম দিয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১টার দিকে মমিনপুর গ্রাম থেকে নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠনের সঙ্গে সম্পৃক্ত অভিযোগে সাবেক ছাত্রলীগ নেতা মাইনুল ইসলামকে আটক করে বাউফল থানা পুলিশ। এরপরই অভিযোগ ওঠে, তাকে ছাড়িয়ে নিতে থানায় ছুটে যান কেশবপুর ইউনিয়ন যুব জামায়াতের সভাপতি গোলাম আবু সাঈদ (Golam Abu Sayed)।
আটক মাইনুল ইসলাম কেশবপুর ইউনিয়নের মমিনপুর গ্রামের মো. আব্দুস সালাম সিকদারের ছেলে। তিনি দীর্ঘদিন ধরে একই ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ড ছাত্রলীগের সহ-সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন। তবে তার রাজনৈতিক অবস্থান নিয়ে সম্প্রতি এলাকায় নানা প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রের দাবি, আটকের আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মাইনুলের স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার একাধিক ছবি ছড়িয়ে পড়ে। এসব ছবি ঘিরে নতুন করে বিতর্ক দানা বাঁধে। স্থানীয়রা জানায়, ২০২৪ সালের কেশবপুর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে মাইনুল ও তার ভাই আমিনুল প্রকাশ্যে সমর্থন করেছিলেন সাবেক সংসদ সদস্য, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আসম ফিরোজ (ASM Feroz)-এর শ্যালক ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য এনামুল হক ওরফে অপুর পক্ষে। সে সময় নির্বাচনি সহিংসতার নানা ঘটনায় সরাসরি নেতৃত্ব দিতে দেখা গিয়েছিল মাইনুলকে।
এমন প্রেক্ষাপটে বৃহস্পতিবার পুলিশের হাতে ধরা পড়েন তিনি। এরপরই থানায় গিয়ে ছাড়িয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন জামায়াত নেতা গোলাম আবু সাঈদ। এ বিষয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে তিনি দাবি করেন, “মাইনুল কোনোদিন ছাত্রলীগের পদে ছিলেন না। বরং তিনি আমাদের ইউনিয়ন জামায়াতের যুব কমিটির অর্থ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তার জন্যই আমি স্বাভাবিকভাবেই থানায় গিয়েছিলাম।”
এদিকে বাউফল থানার ওসি আকতারুজ্জামান সরকার স্পষ্ট ভাষায় জানান, মাইনুলকে ছেড়ে দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ অত্যন্ত গুরুতর। তিনি নিষিদ্ধ সংগঠনের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত এবং এলাকায় অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরির চেষ্টা করছিলেন। গোপন সূত্র থেকে প্রাপ্ত তথ্য-প্রমাণের ভিত্তিতেই তাকে আটক করা হয়েছে।
ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসার পর বাউফলজুড়ে চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়েছে। স্থানীয় রাজনৈতিক অঙ্গনেও এ নিয়ে চলছে তুমুল আলোচনা।