কারাগারে আ. লীগ নেতার মৃত্যু, স্বজনের অভিযোগ মরদেহে ছিল হাতকড়া

গাইবান্ধা কেন্দ্রীয় কারাগারে আবু বক্কর সিদ্দিক (৭০) নামে এক সাজাপ্রাপ্ত কয়েদির মৃত্যু ঘিরে তীব্র ক্ষোভের জন্ম দিয়েছে পরিবারে। মৃতের স্বজনরা অভিযোগ করেছেন, মৃত্যুর পরও তাকে হাতকড়া পরানো অবস্থায় ময়নাতদন্ত ঘরে放ে রাখা হয়।

রোববার রাত সাড়ে ১১টার দিকে অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে কারাগার থেকে গাইবান্ধা ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক আবু বক্কর সিদ্দিককে মৃত ঘোষণা করেন।

কারা কর্তৃপক্ষ জানায়, নিহত আবু বক্কর সিদ্দিক গাইবান্ধা জেলার ফুলছড়ি উপজেলার কঞ্চিপাড়া ইউনিয়নের হোসেনপুর গ্রামের বাসিন্দা। তিনি ওই গ্রামের মৃত মমতাজ উদ্দিনের ছেলে। জীবদ্দশায় তিনি কঞ্চিপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এবং ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ছিলেন। এছাড়া তিনি ব্যবসার সঙ্গেও জড়িত ছিলেন।

মৃতের ভাতিজা সিফাত অভিযোগ করে বলেন, “চাচা অসুস্থ হওয়ার খবর আমরা জানতে পারি মৃত্যুর ঘণ্টার পর ঘণ্টা পরে, আজ সকাল ১০টার দিকে। কারা কর্তৃপক্ষ গতরাতে যদি আমাদের বিষয়টি জানাত, আমরা হয়তো উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা করে তাকে বাঁচাতে পারতাম।” ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি আরও বলেন, “হাসপাতালে গিয়ে দেখি, মৃত্যুর পরও তাকে হাতকড়া পরানো অবস্থায় ময়নাতদন্ত ঘরে放ে রাখা হয়েছে।”

সিফাত জানান, দীর্ঘদিন ধরে আবু বক্কর সিদ্দিক হৃদরোগ, উচ্চ রক্তচাপ ও ডায়াবেটিসে ভুগছিলেন। মাত্র দু’দিন আগেও তিনি তাকে ওষুধ কিনে দিয়েছেন। অসুস্থতার কারণে গত ১৫ বছর তিনি রাজনীতি ও ব্যবসা থেকে সরে দাঁড়িয়েছিলেন। অথচ সম্প্রতি গোবিন্দগঞ্জে বিএনপির কার্যালয় ভাঙচুর ও হামলা মামলার আসামি করে তাকে গত ১ সেপ্টেম্বর আটক করে কারাগারে পাঠানো হয়।

তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন গাইবান্ধার কারা সুপার আনোয়ার হোসেন। তিনি জানান, আবু বক্কর সিদ্দিক ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হয়ে গত ২ সেপ্টেম্বর কারাগারে আসেন। তিনি বার্ধক্যজনিত কারণে হৃদরোগসহ বিভিন্ন অসুস্থতায় ভুগছিলেন এবং নিয়মিত চিকিৎসা ও ওষুধ গ্রহণ করতেন। সোমবার রাতে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে হাসপাতালে নেওয়া হয় এবং জরুরি বিভাগের চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

কারা সুপার আরও জানান, পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য কারাগারে দেওয়া নম্বরে কল করলে সেটি বন্ধ পাওয়া যায়। তাই রাতে যোগাযোগ সম্ভব হয়নি। পরদিন সকালে এলাকার আরেকজনের নম্বর সংগ্রহ করে মৃত্যুর খবর পরিবারকে জানানো হয়।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *