নতুন নিয়মে , শ্বশুরবাড়ি থেকে পাওয়া অর্থ সম্পদেরও কর দিতে হবে

জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (National Board of Revenue) (এনবিআর) নতুন এক নির্দেশনা জারি করেছে, যেখানে শ্বশুরবাড়ির সদস্যদের কাছ থেকে পাওয়া অর্থ বা সম্পদকে করের আওতায় আনা হয়েছে। এতদিন পর্যন্ত ভাই–বোন, বাবা–মা, সন্তান কিংবা স্বামী–স্ত্রীর মধ্যে দেওয়া উপহার বা সম্পদের লেনদেনে কর প্রযোজ্য হতো না, সেই নিয়ম অপরিবর্তিত থাকলেও শ্বশুরবাড়ির ক্ষেত্রে এবার আলাদা নজরদারি আসছে।

নতুন অর্থবছর থেকে এনবিআর স্বীকৃতি দিয়েছে যে সহোদরদের মধ্যে দেওয়া যেকোনো উপহার বা দান করমুক্ত থাকবে। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়— যদি কোনো ভাই তার বোনকে দুই লাখ টাকা উপহার দেন এবং তা আয়কর রিটার্নে উল্লেখ করা হয়, তবে এর ওপর কোনো কর দিতে হবে না। শুধু নগদ অর্থ নয়, পারিবারিক জমি, ফ্ল্যাট কিংবা অন্য যেকোনো স্থাবর বা অস্থাবর সম্পদও এ ছাড়ের আওতায় থাকবে।

প্রবাসী বাংলাদেশিরা নিয়মিতভাবে ভাই–বোনকে অর্থ পাঠান বা মূল্যবান উপহার দেন। রেমিট্যান্স নিজেই করমুক্ত হলেও এবার দানের বিষয়টি আরও সুস্পষ্টভাবে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে। তবে নির্ধারিত হয়েছে, পাঁচ লাখ টাকার বেশি যেকোনো লেনদেন অবশ্যই ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে সম্পন্ন করতে হবে।

অন্যদিকে, শ্বশুর–শাশুড়ি, শ্যালক–শ্যালিকা বা শ্বশুরবাড়ির অন্য কোনো সদস্যের কাছ থেকে পাওয়া অর্থ কিংবা সম্পদ করযোগ্য হবে। এনবিআরের নির্দেশনায় স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে, এ ধরনের উপহার বা দান আয়কর রিটার্নে উল্লেখ করতে হবে এবং প্রয়োজনীয় কর প্রদান করতে হবে। পাশাপাশি, উপহার প্রদানকারীকেও তার রিটার্নে বিষয়টি দেখাতে হবে। বিশেষ করে গয়না, জমি, ফ্ল্যাট বা অন্যান্য মূল্যবান সম্পদ যদি শ্বশুরবাড়ি থেকে আসে, তাহলে কর কর্মকর্তারা তার উৎস সম্পর্কেও প্রশ্ন তুলতে পারেন।

কর কর্মকর্তাদের মতে, অনেক সময় শ্বশুরবাড়ি থেকে প্রাপ্ত সম্পদকে ‘উপহার’ হিসেবে দেখানো হলেও উপহারদাতার রিটার্নে তার কোনো উল্লেখ থাকে না। এমন পরিস্থিতিকে অবৈধভাবে অর্জিত অর্থ বৈধ করার প্রচেষ্টা হিসেবে ধরা হতে পারে। এজন্যই এনবিআর এবার স্পষ্টভাবে ভাগ করে দিয়েছে— কোন ধরনের দান বা উপহার করমুক্ত এবং কোনটি করের আওতায় পড়বে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *