বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন (Dr. AZM Zahid Hossain) বলেছেন, প্রধান উপদেষ্টার সাম্প্রতিক মন্তব্য নতুন করে দেশের রাজনীতিতে প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। তার ভাষায়, আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত কোনো আইন, আদালত বা সরকারি চাপে নয়—এ সিদ্ধান্ত নেবে কেবল দেশের জনগণ। তিনি স্পষ্ট করে বলেন, যারা গণহত্যা, গুম ও খুনের সঙ্গে জড়িত, তাদের বিচারের মুখোমুখি করতেই হবে।
বুধবার (১ অক্টোবর) জাতীয় প্রেস ক্লাবে আয়োজিত এক আলোচনা সভায়, যা আয়োজন করে আজহার-শফিক ফাউন্ডেশন, প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা তুলে ধরেন।
তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগের অপরাধের বিচার চেয়ে বিএনপি সব সময় সোচ্চার থেকেছে। যারা গণহত্যার আদেশ দিয়েছে, তাদের আইনের আওতায় এনে বিচার করার দাবি আগেই জানিয়েছে বিএনপি। তিনি জোর দিয়ে বলেন, প্রধানমন্ত্রী হোন বা অন্য কেউ—বিএনপি স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছে, আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ হবে কিনা সে রায় জনগণ দেবে। আইন-আদালত কেবল তাদের অপরাধের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে, কিন্তু রাজনৈতিক নিষিদ্ধের প্রশ্নে জনগণের রায়ই হবে চূড়ান্ত।
ডা. জাহিদ আওয়ামী লীগের অতীত কর্মকাণ্ড নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি নিয়ে আওয়ামী লীগ যতই কথা বলুক না কেন, ২০২৪ সালের গণহত্যার মতো ভয়াবহ ঘটনাগুলোর জন্য তারা কখনও অনুশোচনা প্রকাশ করেনি। তিনি প্রশ্ন রাখেন—”আয়নাঘর, লুটপাট, প্রতিহিংসা, দিনের ভোট রাতে করা—এসবের জন্য তাদের কি একবারও অনুশোচনা হয়েছে?” তার মতে, আওয়ামী লীগের উচিত জনগণের কাছে নিঃশর্ত ক্ষমা চাওয়া, তবে তাদের ক্ষমা করবে কিনা, সেই রায় দেবে জনগণ।
ভবিষ্যতের রাজনৈতিক প্রসঙ্গেও তিনি কথা বলেন। তার দাবি, আগামী ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনের সম্ভাবনা রয়েছে এবং বিএনপি চায় সেই নির্বাচন হোক। কারণ জনগণ বহু বছর ধরে প্রকৃত প্রতিনিধিকে ভোটের মাধ্যমে বেছে নেওয়ার সুযোগ পাচ্ছে না।
সমাজ ও রাষ্ট্র নিয়ে বিস্তৃত দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরে তিনি বলেন, সমাজকে টেকসই করতে হলে সবার অংশগ্রহণ জরুরি। বিশেষ করে প্রবীণদের জন্য আলাদা উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানান তিনি। তার মতে, প্রবীণরা যেন সমাজের বোঝা না হয়ে ওঠে, এজন্য সরকারের দায়িত্ব নিতে হবে। বাজেটে তাদের জন্য আলাদা বরাদ্দ রাখা এবং সম্মানের সঙ্গে বেঁচে থাকার পরিবেশ তৈরি করাই হবে প্রকৃত দায়িত্বশীলতার প্রমাণ।