বিএনপির ভাবমূর্তি নষ্ট হওয়ার পেছনে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রেখেছে জামায়াতে ইসলামী (Jamaat-e-Islami)—এমন মন্তব্য করেছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও সাংবাদিক মাসুদ কামাল (Masud Kamal)। তার মতে, বিএনপি স্থানীয় পর্যায়ে যতটা অপকর্ম বা বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে জড়িয়েছে, তার থেকেও বেশি সেই বিষয়গুলোকে সামনে এনেছে জামায়াতের আচরণ। এতে বিএনপির রাজনৈতিক ইমেজ আরও বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
নিজের ফেসবুক পেজে দেওয়া এক ভিডিওতে তিনি প্রধান উপদেষ্টার নিউইয়র্ক সফর ও দেশের বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট বিশ্লেষণ করতে গিয়ে এ মন্তব্য করেন।
মাসুদ কামাল বলেন, ডাকসু নির্বাচনের আগে পর্যন্ত জামায়াত তুলনামূলকভাবে নম্র অবস্থান নিয়েছিল। কিন্তু ডাকসু ও জাকসু নির্বাচনে ব্যাপক বিজয়ের পর তাদের নেতাদের ভাষা ও আচরণে হঠাৎ পরিবর্তন আসে। তারা অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসী হয়ে ওঠেন এবং বোঝাতে চান—শিক্ষাঙ্গনের এই সাফল্যই সারা দেশের ফলাফলের প্রতিফলন হবে। তবে জনগণ তাদের এই পরিবর্তন ভালোভাবে নেয়নি। বরং জামায়াত নেতাদের চটকদার বক্তব্য ও অসংলগ্ন বার্তাই উল্টো নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া তৈরি করেছে।
তিনি আরও বলেন, সামনের দিনগুলোতে দেশের রাজনীতি আবর্তিত হবে নির্বাচনকে ঘিরে। এই নির্বাচন আদৌ কেমন হবে, শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করা সম্ভব হবে কি না—এমন প্রশ্ন সামনে আসবে। বিশেষ করে ড. ইউনূস (Dr. Yunus) যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন—‘ইতিহাসের শ্রেষ্ঠ নির্বাচন’ উপহার দেওয়ার—তিনি সত্যিই কি তা দিতে পারবেন, সেটিও আলোচনার বিষয় হবে। জুলাই সনদ নিয়েও আলাপ হবে, তবে মূল কেন্দ্রবিন্দুতে থাকবে নির্বাচনই।
রাজনৈতিক বিশ্লেষক মাসুদ কামাল মনে করেন, নির্বাচন নিয়ে আলোচনায় আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন সামনে আসবে—কে জিতবে? এই নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা আদৌ হবে কি না, হলে কারা অংশ নেবে? আওয়ামী লীগ (Awami League) থাকবে কি না, না থাকলে তাদের ভোট কোথায় যাবে—এসবই আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে আসবে।
তিনি বলেন, অনেকে প্রশ্ন তুলছেন, যদি সত্যিই অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হয়, তাহলে বিজয়ী দল কে হবে? কিছুদিন আগেও এ প্রশ্নের উত্তর দেওয়া সহজ ছিল। কিন্তু এখন যে কাউকে জিজ্ঞেস করলে, উত্তর দিতে সময় নিচ্ছেন। কারণ, অতীতে যখন সবাই ভেবেছিলেন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নির্বাচনে ফলাফল অনুমান করা সহজ, তখনও বাস্তব ফলাফলে অনেকেই ভুল প্রমাণিত হয়েছেন। এখন জাতীয় নির্বাচন নিয়েও কি সেই একই ভুল হচ্ছে?
তার মতে, মাত্র আট মাস আগেও অনেকের ধারণা ছিল, নির্বাচনের মানেই বিএনপির নিরঙ্কুশ জয়। কিন্তু বর্তমানে বিএনপি নেতারাও নিজেরা নিশ্চিতভাবে বলতে পারছেন না—তাদের হাতে এখনো সেই নিশ্চয়তা আছে কি না।
বার্তা বাজার/এস এইচ