বিএনপি (BNP) ১৩তম জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে পুরোদমে প্রস্তুতি চালিয়ে যাচ্ছে। প্রার্থী যাচাই-বাছাই কার্যক্রম প্রায় শেষ পর্যায়ে। তবে দলটি এবার এককভাবে নয়, বরং যুগপৎ আন্দোলনে থাকা মিত্র দলগুলোকে নিয়েই নির্বাচনে যেতে চায়। এজন্য মিত্রদের জন্য আসন ছাড়ার পরিকল্পনাও রয়েছে, আর তাতে শতাধিক আসনের দাবি তুলেছে বিএনপির রাজনৈতিক মিত্ররা।
দলটির একাধিক শীর্ষ নীতিনির্ধারকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এরই মধ্যে বেশ কয়েকটি দল ও জোট সম্ভাব্য প্রার্থীদের তালিকা বিএনপির কাছে জমা দিয়েছে। লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপি) চেয়েছে ১৫টি আসন, আর গণফোরাম (Gano Forum)-এর ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সুব্রত চৌধুরী চান ঢাকা-৬সহ ১৫টি আসন।
এদিকে গণতন্ত্র মঞ্চ (Ganatantra Mancha) চাইছে অর্ধশতাধিক আসন। শনিবার নিজেদের অভ্যন্তরীণ বৈঠকে এ বিষয়ে আলোচনা করেছে মঞ্চ। গঠিত হয়েছে ছয় সদস্যের একটি কমিটি, যারা আজই প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত করবে। অন্যদিকে ১২ দলীয় জোট চেয়েছে অন্তত ২০টি আসন এবং জাতীয়তাবাদী সমমনা জোটের দাবি ৯টি আসন।
এরই মধ্যে পাওয়া প্রার্থী তালিকা অনুযায়ী, নড়াইল-২ থেকে মনোনয়ন চেয়েছেন জোটের সমন্বয়ক ও এনপিপি (NPP) চেয়ারম্যান ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদ। দলের মহাসচিব মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তফা মনোনয়ন চেয়েছেন কিশোরগঞ্জ-২ আসন থেকে। অন্যান্য প্রার্থীদের মধ্যে রয়েছেন—জাগপা (JAGPA) একাংশের সভাপতি খন্দকার লুৎফর (বগুড়া-১), গণদলের এটিএম গোলাম মাওলা চৌধুরী (চট্টগ্রাম-১), বাংলাদেশ সাম্যবাদী দলের কমরেড ডা. সৈয়দ নূরুল ইসলাম (মানিকগঞ্জ-১), বাংলাদেশ মুসলিম লীগের ব্যারিস্টার নাসিম খান (ঢাকা-১৭), বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক পার্টির এসএম শাহাদাত (বাগেরহাট-১), ডেমোক্রেটিক লীগের মাহবুব আলম (দিনাজপুর-২) এবং এনডিপির আব্দুল্লাহ আল হারুন (ফেনী-৩)।
তবে সব দল এখনই তালিকা প্রকাশে রাজি নয়। কৌশলগত কারণে কিছু মিত্র দল এ বিষয়ে প্রকাশ্যে কথা বলতে চাচ্ছে না। কেউ কেউ আরও কিছুদিন সময় চাচ্ছে তালিকা চূড়ান্ত করতে।
মিত্রদের কত আসন ছাড়বে বিএনপি—এ বিষয়ে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন (Khandaker Mosharraf Hossain) বলেন, ‘বিষয়টি এখনো চূড়ান্ত হয়নি, আলোচনা চলছে।’
বিএনপির নীতিনির্ধারণী সূত্রে জানা গেছে, সম্ভাব্য একক প্রার্থীদের প্রথমে অনানুষ্ঠানিকভাবে সবুজ সংকেত দেওয়া হবে। তারা মাঠপর্যায়ে প্রচারণা চালাবেন এবং একই আসনে থাকা অন্যান্য মনোনয়নপ্রত্যাশীরা তাদের পক্ষে কাজ করবেন। পুরো প্রক্রিয়াটি থাকবে কঠোর নজরদারিতে। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে তফসিল ঘোষণার পর পার্লামেন্টারি বোর্ড তাদের প্রার্থিতা চূড়ান্ত করবে।
তফসিল সামনে রেখে দলীয় কাঠামো ও মিত্রদের অবস্থান মিলিয়ে চূড়ান্ত নির্বাচনী কৌশল নির্ধারণ করছে বিএনপি। লক্ষ্য একটাই—বিচ্ছিন্ন না হয়ে সম্মিলিত শক্তি নিয়ে ভোটের লড়াইয়ে নামা।