ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রেক্ষাপটে দেশের প্রধান বিরোধী দল বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (Bangladesh Nationalist Party – BNP) তাদের রাজনৈতিক কৌশল স্পষ্ট করেছে। দলটি ২৩৭টি আসনে সম্ভাব্য প্রার্থীর তালিকা প্রকাশ করেছে, যেখানে তিনটি আসনে মনোনয়ন পেয়েছেন দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া (Khaleda Zia)। দিনাজপুর-৩, বগুড়া-৭ ও ফেনী-১ আসনে লড়বেন তিনি।
সোমবার বিকেলে গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এই তালিকা ঘোষণা করেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর (Mirza Fakhrul Islam Alamgir)। তিনিও এবার প্রার্থী হচ্ছেন ঠাকুরগাঁও-১ আসনে। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান (Tarique Rahman) মনোনয়ন পেয়েছেন বগুড়া-৬ আসনে।
মনোনয়ন পাওয়া প্রার্থীদের মধ্যে রয়েছেন ১০ জন নারী নেত্রী, যার মাধ্যমে নির্বাচনী মাঠে নারীর অংশগ্রহণে জোরালো বার্তা দিতে চায় বিএনপি। দলের ঘনিষ্ঠ সূত্র জানিয়েছে, ৬৩টি আসন এখনো ফাঁকা রাখা হয়েছে—সম্ভাব্য শরিকদের জন্য। এর মধ্যেই ১২ জন শরিক নেতাকে ‘গ্রিন সিগন্যাল’ দেওয়া হয়েছে বলে জানানো হয়।
বিশ্বস্ত সূত্র অনুযায়ী, মনোনয়নের জন্য সবুজ সংকেত পাওয়া শরিক নেতাদের মধ্যে রয়েছেন:
- পিরোজপুর-১: জাতীয় পার্টি (জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার (Mostafa Jamal Haider)
 - বগুড়া-২: নাগরিক ঐক্য সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না (Mahmudur Rahman Manna)
 - ঢাকা-১৭: বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি (বিজেপি) চেয়ারম্যান আন্দালিব রহমান পার্থ (Andaleeve Rahman Partha)
 - লক্ষ্মীপুর-১: বাংলাদেশ এলডিপির চেয়ারম্যান শাহাদাত হোসেন সেলিম (Shahadat Hossain Selim)
 - কিশোরগঞ্জ-৫: বাংলাদেশ জাতীয় দলের চেয়ারম্যান সৈয়দ এহসানুল হুদা (Syed Ehsanul Huda)
 
আরও যাদের নাম রয়েছে গ্রিন সিগন্যালপ্রাপ্তদের তালিকায়:
- ঢাকা-১৩: এনডিএম চেয়ারম্যান ববি হাজ্জাজ (Bobby Hajjaj)
 - ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৬: গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি (Zonayed Saki)
 - চট্টগ্রাম-১৪: এলডিপি চেয়ারম্যান কর্নেল (অব.) অলি আহমদের ছেলে অধ্যাপক ওমর ফারুক
 - কুমিল্লা-৭: এলডিপি মহাসচিব ড. রেদোয়ান আহমেদ
 - নড়াইল-২: জাতীয়তাবাদী সমমনা জোটের সমন্বয়ক ও এনপিপি চেয়ারম্যান ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদ
 - পটুয়াখালী-৩: গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর (Nurul Haque Nur)
 - ঝিনাইদহ-২: দলটির সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান
 
এই মনোনয়ন তালিকা এবং শরিকদের ‘গ্রিন সিগন্যাল’ দেওয়ার মাধ্যমে আগামী নির্বাচনের আগে বিএনপি যে বড় রাজনৈতিক সমীকরণের পথে এগোচ্ছে, তা স্পষ্ট হয়ে উঠছে। শরিকদের জন্য আসন ছাড়ার এ কৌশল জোট রাজনীতিকে আরও গতিশীল করতে পারে বলে ধারণা রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের।


