মসজিদে অন্যরা কথা বলতে পারলে বিএনপি নেতারা কেন পারবেন না—কর্মশালায় প্রশ্ন তারেক রহমানের

রাজধানীর ফার্মগেটের কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত বিএনপির উদ্যোগে ‘দেশ গড়ার পরিকল্পনার কর্মসূচি’ বিষয়ক কর্মশালায় দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান (Tarique Rahman) আজ বৃহস্পতিবার নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে কড়া সুরে প্রশ্ন তুলেছেন—“আমি দেখলাম, কিছু ব্যক্তি মসজিদে গিয়ে তাঁদের কথা বলছেন। তাঁরা যদি বলতে পারেন, আপনি কেন বলতে পারবেন না? বললে সবাই বলবেন, না বললে কেউ বলতে পারবেন না। আপনি আপনার এলাকায় সেভাবে ব্যবস্থা গ্রহণ করুন।”

রাজনৈতিক পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে উপস্থিত নেতাদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, “ভোটযুদ্ধ সামনে। আপনারা পরীক্ষিত নেতা-কর্মী। শত অত্যাচার-নির্যাতনের মধ্যেও দলকে ধরে রেখেছেন। ওয়ান-ইলেভেনের ষড়যন্ত্র থেকে শুরু করে গত ১৫ বছরের স্বৈরাচারী সময়—সবই আপনারা মোকাবিলা করেছেন। তাহলে এখনকার নির্বাচনী যুদ্ধ কেন মোকাবিলা করতে পারবেন না?”

তারেক রহমান আরও বলেন, বিএনপির যে পরিকল্পনা জনগণকে কেন্দ্র করে তৈরি, তা জনগণের কাছে পৌঁছে দেওয়ার দায়িত্ব মাঠের নেতা-কর্মীরাই বহন করবেন। তাঁর ভাষায়, “দেশ গড়ার পরিকল্পনা বাস্তবায়নে জনগণের সমর্থন প্রয়োজন। আর সেই সমর্থন পেতে হলে আপনাদের সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা ও উদ্যোগ জরুরি।”

“নেতা শিগগিরই আসবেন”—মির্জা ফখরুলের প্রত্যাশা

কর্মশালায় বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর (Mirza Fakhrul Islam Alamgir) উপস্থিত নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে বলেন, “আজকে যেহেতু বাংলাদেশের সব জায়গার নেতারা এখানে আছেন, আমি আপনাদের জানাতে চাই—আমাদের নেতা খুব শিগগিরই আমাদের মাঝে আসবেন। যেদিন তিনি দেশে পা দেবেন, সেদিন যেন সারা দেশ কেঁপে ওঠে।”

তিনি আরও দৃঢ়ভাবে বলেন, “এখন সংগ্রাম হচ্ছে নির্বাচনে জয়লাভের সংগ্রাম। এই নির্বাচনে সম্পূর্ণভাবে জিততে হবে, যাতে আমরা বাংলাদেশকে সামনে এগিয়ে নেওয়ার সুযোগ পাই।”

ফখরুল অভিযোগ তুলে বলেন, বিএনপির বিরুদ্ধে নানা প্রচারণা চলছে এবং আরও হবে। কিন্তু তিনি মনে করিয়ে দেন—“বিএনপি কোনো দিনই পরাজিত হয়নি, পরাজিত হবে না। বিএনপি জনগণের দল, মুক্তিযুদ্ধের দল, গণতন্ত্রের সংগ্রামের দল—এটা সব সময় মনে রাখবেন।”

“১৯৭১ আমাদের অস্তিত্ব”—বিতর্কিত মন্তব্য নিয়ে ক্ষোভ

মির্জা ফখরুল সাম্প্রতিক এক বিতর্কিত মন্তব্যের সমালোচনায় বলেন, “আজ আমি পত্রিকায় দেখলাম—১৯৭১ সালের প্রজন্ম নাকি নিকৃষ্টতম প্রজন্ম! কোন সাহসে তারা এমন কথা বলে? মানুষকে বিভ্রান্ত করে, আমাদের প্রিয় ধর্মকে ব্যবহার করে কি তারা সমাজকে বিপথে নিতে চাইছে? এই শক্তির বিরুদ্ধে আমাদের রুখে দাঁড়াতে হবে।”

তিনি বলেন, এখনকার লড়াই দুই দিক থেকে—একদিকে বাংলাদেশকে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিকভাবে স্থিতিশীল করার প্রচেষ্টা, অন্যদিকে অপশক্তিকে প্রতিহত করা। “আমরা ইতিবাচক রাজনীতি করি, অগ্রগতির চিন্তা করি”—যোগ করেন তিনি।

কর্মশালায় দলের শীর্ষ নেতাদের উপস্থিতি

‘দেশ গড়ার পরিকল্পনা’ কর্মসূচির বাস্তবায়ন কমিটির আহ্বায়ক ও বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী (Ruhul Kabir Rizvi) কর্মশালার সভাপতিত্ব করেন। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন যুগ্ম মহাসচিব হাবিব-উন-নবী খান সোহেল। কর্মশালায় বিএনপির অন্যান্য নেতারাও বক্তব্য দেন।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *