পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার বড় ডালিমা গ্রামে জমি সংক্রান্ত পুরনো বিরোধকে কেন্দ্র করে এক গৃহবধূর উপর শ্লী’\ল’\তা’\হা’\নি ও হ’\ত্যা চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে জামায়াতে ইসলামীর এক ওয়ার্ড পর্যায়ের নেতার বিরুদ্ধে। শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে এই ঘটনা ঘটে বলে দাবি করেছেন ভুক্তভোগী নারীর পরিবার।
ভুক্তভোগীর মা মোসা. মাহিনুর বেগম জানান, অভিযুক্ত মো. শুভর সঙ্গে তাদের পরিবারের দীর্ঘদিনের জমি নিয়ে বিরোধ চলছে। ঘটনার দিন সকালে শুভ বিরোধপূর্ণ জমির পুকুরে ঘাটলা নির্মাণ করতে গেলে তার মেয়ে বাধা দেন। তখন ক্ষিপ্ত হয়ে শুভ তাকে জোরপূর্বক জাপটে ধরেন এবং শরীরের স্পর্শকাতর স্থানে হাত দেওয়ার চেষ্টা করেন বলে অভিযোগ করা হয়েছে।
নিজেকে রক্ষা করতে গৃহবধূ পুকুরে ঝাঁপ দিলেও তাতে রক্ষা পাননি। শুভ পুকুরে নেমে আবারও তাকে একইভাবে হেনস্থা করেন বলে জানান মাহিনুর বেগম। তিনি আরও বলেন, “আমার মেয়ের সালোয়ার-কামিজ ছিঁড়ে ফেলা হয় এবং পরে তাকে পানিতে ডুবিয়ে হ’\ত্যা করার চেষ্টা চালানো হয়।”
অভিযোগে বলা হয়, ঘটনার সময় আরও কয়েকজন জামায়াত কর্মী ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন এবং তারা আশপাশ পাহারা দিচ্ছিলেন। মেয়ের চিৎকার শুনে মাহিনুর বেগম নিজে যখন তাকে উদ্ধার করতে এগিয়ে যান, তখন তাকেও মারধর করা হয়। পরে স্থানীয়রা মা-মেয়েকে উদ্ধার করে বাউফল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন।
ভুক্তভোগী গৃহবধূর স্বামী মো. আক্কাস মুন্সী বলেন, “নাজিরপুর ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ড জামায়াত সভাপতি মো. শুভ ও তার লোকজন আমার স্ত্রীকে লাঞ্ছিত করেছেন।”
বাউফল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডা. নুরজাহান বেগম জানান, “গৃহবধূ ও তার মা মানসিকভাবে বিপর্যস্ত ছিলেন। গৃহবধূর শ্বাসকষ্টের উপসর্গ দেখা দেয়। তাদের দুজনকেই ভর্তি রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে এবং বর্তমানে তারা স্থিতিশীল অবস্থায় আছেন।”
অভিযুক্ত মো. শুভ সব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “যদি কোনো প্রমাণে আমি দোষী প্রমাণিত হই, তাহলে আইনের যেটা শাস্তি হবে, আমি মাথা পেতে নেব।” তবে তিনি জামায়াতে কোনো পদে রয়েছেন কি না—এই বিষয়ে তিনি মন্তব্য করতে রাজি হননি।
এ বিষয়ে বাউফল উপজেলা জামায়াতের সেক্রেটারি মো. খালিদুর রহমান বলেন, “তিনি (শুভ) কোন পদে আছেন তা আমার জানা নেই। আমার কাছে ইউনিয়ন কমিটির কাগজ আছে, ওয়ার্ড কমিটির নেই। এমন ঘটনার খবরও আমার জানা নেই।”
বাউফল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. সিদ্দিকুর রহমান জানান, “ঘটনার বিষয়ে একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। হাসপাতালে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”


