২৫ ডিসেম্বর তারেক রহমানের জন্য থাকছে নজিরবিহীন নিরাপত্তা ব্যবস্থা

দীর্ঘ সাড়ে ১৭ বছর পর দেশে ফিরছেন বিএনপি (BNP)-র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান (Tarique Rahman)। ২৫ ডিসেম্বর সকাল ১১টা ৫৫ মিনিটে তার লন্ডন থেকে ঢাকায় অবতরণের কথা রয়েছে। এ উপলক্ষে রাজধানীজুড়ে, বিশেষ করে গুলশান, বনানী, বারিধারা ও বিমানবন্দর এলাকায় নেয়া হচ্ছে নজিরবিহীন নিরাপত্তা ব্যবস্থা।

পুলিশ, গো’\য়েন’\দা সংস্থা, সিএসএফ এবং এসএসএফ—এই চার স্তরের সমন্বিত নিরাপত্তা কাঠামোতে প্রায় দুই হাজার আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন থাকবে। এ ছাড়া বিএনপির নিজস্ব বাহিনী চেয়ারপারসন সিকিউরিটি ফোর্স (সিএসএফ) রয়েছে সর্বোচ্চ প্রস্তুতিতে। গুলশান অ্যাভিনিউয়ের নতুন বাসা, এভারকেয়ার হাসপাতাল ও যাতায়াতের পথজুড়ে থাকবে চেকপোস্ট, স্পেশাল এস্কর্ট ও ক্লোজ সার্কিট নজরদারি।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তারেক রহমানের নিরাপত্তা নিয়ে ইতিমধ্যে উচ্চপর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে, যার নেতৃত্বে ছিলেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজি), গো’\য়েন’\দা সংস্থার প্রধানসহ গুরুত্বপূর্ণ কর্মকর্তারা। প্রাথমিকভাবে মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দেওয়া হলেও চূড়ান্ত নিরাপত্তা নির্দেশনা সোমবারের মধ্যে আসবে বলে জানা গেছে।

গুলশান এলাকায় সরেজমিনে দেখা গেছে, তারেক রহমানের বাসভবন প্রস্তুতির কাজ চলছে জোরেশোরে। বাড়িটির গেটে অবস্থান করছেন পুলিশ ও সিএসএফ সদস্যরা। বাসার দক্ষিণ পাশ ঘেঁষে রয়েছে খালেদা জিয়ার ভাড়া বাসা ‘ফিরোজা’। দুটি বাসা ও বিএনপির গুলশান কার্যালয়কে একই নিরাপত্তা বলয়ে আনছে পুলিশ সদর দপ্তর।

গুলশানের ডিসি রওনক আলম জানিয়েছেন, “বিভিন্ন ইউনিট সমন্বিতভাবে নিরাপত্তা নিয়ে কাজ করছে। এখনও চূড়ান্ত নির্দেশনা আসেনি, তবে সর্বোচ্চ নিরাপত্তার ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হবে।”

২৫ ডিসেম্বর দিনভর গুলশান, বারিধারা, বনানী ও বিমানবন্দর এলাকায় মোতায়েন থাকবে বিপুলসংখ্যক আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য। প্রতিটি থানা এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন থাকবে এবং মোড়ে মোড়ে থাকবে চেকপোস্ট। গুলশান এলাকায় বর্তমানে ৯টি চেকপোস্ট সক্রিয় রয়েছে, এর সংখ্যা আরও ৩টি বাড়ানো হতে পারে।

এদিকে, খালেদা জিয়াকে রাষ্ট্রীয়ভাবে ‘ভিভিআইপি’ ঘোষণা করার পর তাঁর নিরাপত্তায় কাজ শুরু করেছে স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্স (এসএসএফ)। বর্তমানে তিনি গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। যদি গুলশানের নতুন বাসা প্রস্তুত না হয়, তবে তারেক রহমান ফিরোজায় উঠতে পারেন, যা একইসঙ্গে এসএসএফ ও সিএসএফের নিরাপত্তাব্যবস্থার আওতায় আসবে।

তারেক রহমান ও খালেদা জিয়ার নিরাপত্তা দেখভালের জন্য সম্প্রতি ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এ কে এম শামছুল ইসলামকে ‘প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা’ হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। তিনি জানিয়েছেন, “ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দেশে ফেরাকে কেন্দ্র করে তাঁর নিরাপত্তার জন্য সর্বোচ্চ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।”

তারেক রহমানের ফ্লাইট বিজি–২০২, যেটি ২৪ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় লন্ডনের হিথ্রো বিমানবন্দর থেকে রওনা হয়ে ২৫ ডিসেম্বর সকালে ঢাকায় অবতরণ করবে। কূটনৈতিক সূত্র জানিয়েছে, তিনি দেশে ফেরার জন্য ট্রাভেল পাস পেয়েছেন এবং টিকিটও নিশ্চিত করা হয়েছে।

এই প্রত্যাবর্তনকে স্মরণীয় করতে বিএনপি-র পক্ষ থেকে চলছে নানা প্রস্তুতি। স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ জানিয়েছেন, “তারেক রহমানের ঐতিহাসিক স্বদেশ প্রত্যাবর্তন উপলক্ষে বিমানবন্দর এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে একাধিক বৈঠক হয়েছে। অভ্যর্থনার স্থানসহ যাতায়াত, নিরাপত্তা ও শৃঙ্খলা রক্ষার বিষয়েও আলোচনা করা হয়েছে।”

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *