জাতিসংঘের তথ্য সংগ্রহে জামায়াতের অসহযোগিতা, কেন এই বেঈমানি?

জাতিসংঘ মানবাধিকার কমিশনের ফ্যাক্টফাইন্ডিং মিশন জেনেভায় ১০৫ পৃষ্ঠার রিপোর্ট প্রকাশ করেছে। সেখানে গুরুত্বপূর্ণ কিছু বিষয় উঠে এসেছে। তাঁরা জুলাইয়ে শহীদদের সংখ্যা প্রায় ১৪ শত বলে উল্লেখ করেছে।

আওয়ামিলীগ এবং এর অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের দ্বারা হত্যা, নির্যাতন, এমনকি যৌন নির্যাতনের কথা পর্যন্ত তারা বলেছে। বিজিবি, র‍্যাব এবং পুলিশের নির্বিচার গুলিবর্ষণ, বলপ্রয়োগ, গ্রেফতারের কথা তারা বলেছে।

নিহতদের মধ্যে প্রায় ১২-১৩ শতাংশ শিশু। বহু শিশুকে পঙ্গু করে দেওয়া হয়েছে। ১২ বছরের এক শহীদ শিশুর কথা বলা হয়েছে, যার শরীরে ২০০ টি প্যালেট বুলেট ঢুকেছিল।

হাসিনা নিজে আন্দোলনে জড়িতদের খুন করার নির্দেশ দিয়েছেন। খুন করে সেই লাশ লুকিয়ে ফেলার কথা বলেছেন। এটাও কর্মকর্তাদের বরাতে এই রিপোর্টে এসেছে।

যেসব কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ আছে তাদের বরখাস্ত করে বিচারের সুপারিশও তারা করেছে। কিন্তু এই রিপোর্টে একটা গুরুত্বপূর্ণ তথ্য হচ্ছে, জাতিসংঘের এই কর্মকর্তারা ঢাকায় এসে বিএনপি এবং জাতীয় পার্টির শীর্ষ নেতাদের সাথে বৈঠক করেন এবং সাক্ষাতকার গ্রহন করেন।

কিন্তু জামায়াতের নেতৃত্বস্থানীয় লোকদের সাথে সাক্ষাতের চেষ্টা করলেও তারা সাক্ষাৎ করে নি। শিবিরের নেতাদের সাথে দেখা করতে চাইলে তারাও কোনও সাড়া দেন নাই। এটা জাতিসংঘ তাদের রিপোর্টে সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ করেছে।

রিপোর্টের ১০ পৃষ্ঠার ১১ নম্বর পয়েন্টে জামায়াত ও শিবিরের অসহযোগিতার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। কিভাবে এবং কোন তথ্য উপাত্তের ভিত্তিতে এই রিপোর্ট প্রস্তত করা হয়েছে, সেই সেকশনে জামায়াতের অসহযোগিতার কথা বলা হয়েছে।

অগত্যা জাতিসংঘের কর্মকর্তারা কয়েকজন কর্মীর সাক্ষাৎকার নিয়েছেন। জামায়াত কেন জাতিসংঘকে এড়িয়ে গেছে? সুস্পষ্টভাবেই এটা দলীয় সিদ্ধান্ত ছিল। হাসিনার বিরুদ্ধে জুলাই হত্যাকাণ্ডের তদন্ত করতে আসা জাতিসংঘের টিমের সাথে তারা কেন বসতে চায় নাই? এ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে রাজনৈতিক অঙ্গনে ।

এদিকে সংস্কারের প্রস্তাব হিসাবে সংবিধানে গণহত্যার বিচারের বিধি চায় বিএনপি কিন্তু জামাত চাইছে না। প্রশ্ন উঠেছে, তবে কি জামায়াত আ’লীগকে বাঁচাতে নতুন কোন ছক কষছে? যদি তা সত্যিই হয়ে থাকে, তা হবে নিজেদের কর্মীর রক্তের সাথেই এটা বেইমানি। জুলাইয়ের সাথে বেইমানি।

জাতিসংঘের পূর্নাঙ্গ রিপোর্ট , যে রিপোর্টের ১০ পাতায় ১১ নম্বর পয়েন্টে জামায়াতের অসহযোগিতার কথা উল্লেখ রয়েছে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *