‘ফ্যাসিবাদের মুখাকৃতি’ ও ‘শান্তির পায়রা’ আগুনে পুড়ে ছাই

পহেলা বৈশাখের বর্ষবরণ শোভাযাত্রাকে কেন্দ্র করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (University of Dhaka) চারুকলা অনুষদের নির্মিত ‘ফ্যাসিবাদের মুখাকৃতি’ এবং ‘শান্তির পায়রা’ প্রতীক আগুনে পুড়ে গেছে। শনিবার ভোর ৪টা ৫০ মিনিটে এই অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটে বলে নিশ্চিত করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সাইফুদ্দিন আহমেদ (Proctor Saifuddin Ahmed)।

ঘটনাটি ঘটে এমন এক সময়ে, যখন গোটা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা ছিল নিরাপত্তার চাদরে মোড়া। বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম (Mohammad Rafiqul Islam) বলেন, ‘আমরা সকল ধরনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছিলাম, তারপরও ঘটনাটি ঘটেছে। তবে আমরা এটিকে বিচ্ছিন্ন ঘটনা হিসেবেই দেখছি।’

পরিকল্পিত নাকি দুর্ঘটনা—উত্তর অজানা

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সাইফুদ্দিন আহমেদ জানান, ফজরের নামাজের সময়, ঠিক যখন শিক্ষকরা কাজ শেষ করে চলে গেছেন, তখনই আগুন লাগে। আগুন পরিকল্পিত কিনা, তা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে তিনি বলেন, ‘ফ্যাসিবাদের মুখাকৃতিকে টার্গেট করে আগুন লাগানো হয়েছে। পুড়ে যাওয়া অবয়বের মধ্যে রয়েছে শান্তির প্রতীক পায়রাটিও।’

সাইফুদ্দিন আহমেদ আরও বলেন, ‘গত কয়েকদিন ধরেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এই মোটিফ ঘিরে নানা আলোচনা হচ্ছিল। ফলে আশঙ্কাও ছিল।’ তদন্তের মাধ্যমে আগুন লাগানোর পেছনের কারণ ও জড়িতদের শনাক্ত করার চেষ্টা চলছে বলে তিনি জানান।

প্রতীক গড়া হবে কি নতুন করে?

এই ঘটনায় মিছিল থেমে যাবে না বলেই জানাচ্ছেন কর্তৃপক্ষ। সহকারী প্রক্টর মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা এখনো ভাবছি—নতুন করে কি মোটিফ বানানো হবে, নাকি প্রতিকৃতি ছাড়াই আনন্দ শোভাযাত্রা চলবে। সময় খুব কম, তবে আমরা চেষ্টা করছি।’

এবারের বৈশাখী আয়োজনের মূল প্রতিপাদ্য ছিল— ‘নববর্ষের ঐকতান, ফ্যাসিবাদের অবসান’। এই প্রতিপাদ্যের ধারাবাহিকতায় ‘ফ্যাসিবাদের মুখাকৃতি’ ছিল প্রধান মোটিফ। তবে তা আগুনে পুড়ে যাওয়ায় মিছিলে শূন্যতা তৈরি হবে কি না, তা নিয়েও দুশ্চিন্তা দেখা দিয়েছে সাংস্কৃতিক মহলে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *