যেকারনে দখলে নেয়া আওয়ামী লীগ কার্যালয় ছেড়ে দিলো বিএনপি

চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার সুজাতপুর বাজারে অবস্থিত আওয়ামী লীগের একটি আঞ্চলিক কার্যালয় কিছুদিন আগে বিএনপির নেতাকর্মীরা দখলে নিয়েছিলেন। তবে দলীয় আদর্শ ও নেতার কঠোর নির্দেশে সেই কার্যালয় ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়েছেন তারা।

গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকেই সুজাতপুর বাজারের কার্যালয়টি বন্ধ অবস্থায় ছিল। পরিস্থিতির সুযোগে সেখানে প্রবেশ করে বিএনপির কিছু স্থানীয় নেতাকর্মী। বিষয়টি নজরে আসে চাঁদপুর জেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তানভীর হুদা (Tanvir Huda)-র। তিনি স্পষ্ট নির্দেশ দেন, দলীয় নীতির পরিপন্থী এমন কোনো কর্মকাণ্ড বরদাস্ত করা হবে না, এবং দ্রুততম সময়ের মধ্যে কার্যালয়টি ছেড়ে দিতে হবে।

এই নির্দেশনায় সাড়া দিয়ে সোমবার (২১ এপ্রিল) বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে কার্যালয়টি ছেড়ে দেয় বিএনপির নেতাকর্মীরা। সংবাদ সম্মেলনে তানভীর হুদার পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন মতলব উত্তর উপজেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবু সৈয়দ গোলাম রাব্বানী মামুন।

তিনি বলেন, “আমাদের নেতা ফেসবুকসহ বিভিন্ন মাধ্যমে জানতে পারেন যে, সুজাতপুর বাজারে একটি বিএনপির অফিস উদ্বোধন করা হয়েছে, যা পূর্বে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের অফিস ছিল। তবে আমাদের দলীয় আদর্শ আমাদের শেখায় অন্যের জায়গা দখল করে অফিস চালানো অনুচিত।” তিনি আরো যোগ করেন, “তানভীর হুদা নির্দেশ দিয়েছেন কার্যালয়টি বন্ধ করে দেওয়া হোক এবং বিতর্কহীন স্থানে নতুন অফিস প্রতিষ্ঠা করা হোক। আমরা সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নিয়েছি।”

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন উপজেলা তাতী দলের সভাপতি আনোয়ার হোসেন মুন্সি, বিএনপি নেতা আকবর হোসেন, দুলু ভূঁইয়া, হাসান সরকার, উপজেলা যুবদলের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক হালিম সরকার রিংকু, যুবদল নেতা মিজানুর রহমান প্রধান, বাগানবাড়ী ইউনিয়ন শ্রমিক দলের সভাপতি মফিজুল ইসলাম, ইসলামাবাদ ইউনিয়নের সাবেক ছাত্রদল সভাপতি ও ইউপি সদস্য আল আমিন রহমান, শ্রমিক দল নেতা কবির হোসেন ও ছাত্রদল নেতা ইমরান হোসেনসহ অনেকে।

মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে জেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তানভীর হুদা জানান, দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান (Tarique Rahman)-এর পক্ষ থেকে কড়া বার্তা এসেছে, দখলদারিত্ব, চাঁদাবাজি বা সাধারণ মানুষকে হয়রানি কোনোভাবেই বরদাশত করা হবে না। তিনি বলেন, “বিএনপিতে চাঁদাবাজ ও দখলদারদের কোনো স্থান নেই। আমি সেই নির্দেশনাই বাস্তবায়ন করেছি সুজাতপুরের ঘটনায়।”

এই ঘটনাটি স্পষ্টতই দেখিয়েছে, বিএনপি চায় নিয়মতান্ত্রিক রাজনীতি এবং জনসম্পৃক্ততার ভিত্তিতে এগোতে। রাজনৈতিক দলের দখলদার মনোভাব থেকে সরে এসে জনআস্থা অর্জনের যে প্রচেষ্টা, এই পদক্ষেপ তারই একটি উদাহরণ।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *