জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থীদের চলমান আন্দোলনের মুখে সরকার তাদের সব দাবি মেনে নিয়েছে বলে ঘোষণা দিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (UGC) চেয়ারম্যান অধ্যাপক এস এম এ ফায়েজ। শুক্রবার (১৭ মে) সন্ধ্যায় আন্দোলনস্থলে এসে তিনি সরাসরি এ ঘোষণা দেন।
অধ্যাপক ফায়েজ বলেন, “সরকার জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো মেনে নিয়েছে। এখন থেকে তাদের সমস্যাগুলো দ্রুত সমাধানের পথে এগোনো হবে।” তার এই ঘোষণার পর আন্দোলনকারীদের মধ্যে স্বস্তির আবহ তৈরি হয়।
এর আগে শুক্রবার দুপুরে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মাহফুজ আলম তার ব্যক্তিগত ফেসবুক পেজে এক পোস্টে জানান, “জবির সমস্যার সমাধান নিয়ে সরকারের স্পষ্ট রোডম্যাপ কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই জানানো হবে।” সেই সঙ্গে তিনি লেখেন, “জবির শিক্ষার্থীদের আবাসন সংকট দ্রুতই সমাধান হোক।”
শিক্ষা উপদেষ্টার এই বার্তাই মূলত সরকারের ইতিবাচক অবস্থানের ইঙ্গিত দিয়েছিল। এরপর ইউজিসি চেয়ারম্যানের সরাসরি ঘোষণা আন্দোলনকারীদের জন্য বড় স্বস্তির বার্তা হয়ে আসে।
এর আগে তিন দফা দাবিতে গত কয়েকদিন ধরে কাকরাইল মোড়ে অবস্থান কর্মসূচি পালন করে আসছিলেন জবি শিক্ষার্থীরা। শুক্রবার বিকেল ৪টায় তারা গণ-অনশন শুরু করেন। এর নেতৃত্ব দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় অনুষদের ডিন মঞ্জুর মোর্শেদ, যিনি বিকেল ৩টা ৫০ মিনিটে আনুষ্ঠানিকভাবে অনশনের ঘোষণা দেন।
শিক্ষার্থীদের মূল দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে:
– স্থায়ী আবাসনের ব্যবস্থা
– নিরাপদ ও সাশ্রয়ী পরিবহন সুবিধা
– শিক্ষা ও পরীক্ষা ব্যবস্থায় স্বচ্ছতা ও সংস্কার
আন্দোলনকালে শিক্ষার্থীরা বারবার উল্লেখ করেছেন, তারা কোনো সংঘাত চান না, বরং সমাধান চান। সরকারের পক্ষ থেকে দাবি মেনে নেওয়ার ঘোষণাকে তারা ইতিবাচক বলে স্বাগত জানিয়েছেন।
এদিকে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, সরকারের পক্ষ থেকে একটি রোডম্যাপ তৈরির কাজ চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। রাতের মধ্যেই আনুষ্ঠানিকভাবে তা জানানো হতে পারে বলে ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের এই আন্দোলন গত কয়েকদিনে জাতীয় আলোচনার কেন্দ্রে উঠে এসেছে। ছাত্র-শিক্ষক, সুশীল সমাজ ও রাজনৈতিক বিশ্লেষকরাও আন্দোলনের যৌক্তিকতা ও শান্তিপূর্ণ রূপের প্রশংসা করেছেন।