রাজধানীর উত্তরায় মর্মান্তিক বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় গুরুতর আহতদের চিকিৎসায় সহায়তা করতে ঢাকায় পৌঁছেছে সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালের একটি বিশেষজ্ঞ মেডিকেল দল। বুধবার দুপুরে এই মেডিকেল টিম পরিদর্শন করেছে জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট (National Burn and Plastic Surgery Institute)।
বিকেলে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ নাসির উদ্দীন (Dr. Mohammad Nasir Uddin) জানান, সিঙ্গাপুরের বিশেষজ্ঞ দলটি প্রতিটি রোগীর অবস্থা পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে পর্যবেক্ষণ করেছে এবং গুরুত্বপূর্ণ চিকিৎসা পরামর্শ দিয়েছে।
তিনি বলেন, “আহতদের শারীরিক অবস্থা প্রতি ঘণ্টায় পরিবর্তিত হচ্ছে। ফলে চিকিৎসা ব্যবস্থায়ও প্রতি ১২ ঘণ্টা অন্তর মূল্যায়ন করা হবে এবং সে অনুযায়ী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।”
তবে সিঙ্গাপুরের এই মেডিকেল টিম কতদিন বাংলাদেশে থাকবে সে বিষয়ে এখনো কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি বলে জানান তিনি। একইসঙ্গে, গুরুতর আহতদের বিদেশে চিকিৎসার জন্য পাঠানো হবে কি না— সে প্রশ্নে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি বলেও জানান ডা. নাসির উদ্দীন।
এই মুহূর্তে জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটে ভর্তি থাকা ৪৪ জন আহতকে তিনটি শ্রেণিতে ভাগ করা হয়েছে— ৮ জন ‘ক্রিটিক্যাল’ (গুরুতর আশঙ্কাজনক), ১৩ জন ‘সিবিআর’ (সম্পূর্ণ বিশ্রাম প্রয়োজন), এবং ২৩ জন ‘ইন্টারমিডিয়েট’ ক্যাটাগরিতে।
বুধবার সন্ধ্যা ৭টা ১৫ মিনিটে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর (Directorate General of Health Services) হালনাগাদ তথ্য প্রকাশ করে জানায়, উত্তরার এই দুর্ঘটনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৯ জনে।
আজ ভোরে জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় ৯ বছর বয়সী শিশু নাফিসের। আগের দিন একই দুর্ঘটনায় তার বোনও মারা যান।
এর আগে আইএসপিআর (Inter-Services Public Relations) জানায়, দুর্ঘটনায় মোট ৩১ জন নিহত হয়েছেন এবং আহত হয়েছেন ১৬৫ জন।
সিঙ্গাপুরের এই চিকিৎসা সহায়তা, ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের প্রতি আন্তর্জাতিক সহানুভূতির এক স্পষ্ট নিদর্শন, তবে চিকিৎসা-ব্যবস্থাপনায় দ্রুততার পাশাপাশি দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনার প্রয়োজনীয়তা যেন আরও একবার সামনে চলে এসেছে।