গোপালগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (Gopalganj Science and Technology University) ইতিহাস বিভাগের ছাত্রকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে দায়েরকৃত মামলার সমঝোতা চেষ্টার নামে ৮ লক্ষ টাকা দাবি করার অভিযোগ উঠেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্য সচিব ওমর শরীফ (Omar Sharif)-এর বিরুদ্ধে।
এই বিস্ফোরক অভিযোগ করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী ও আন্দোলনের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক ফয়সাল। গতকাল রবিবার (২৫ মে) রাত সাড়ে ১০টার দিকে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি অভিযোগ উত্থাপন করেন।
সংবাদ সম্মেলনে ফয়সাল বলেন, “গত ২৫ জানুয়ারি আমাদের ওপর হামলার ঘটনায় আমি বাদী হয়ে একটি মামলা করি। পরে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও কয়েকজন ছাত্রনেতার সহায়তায় আমরা সমঝোতায় যেতে রাজি হই এবং কিছু শর্ত দিই। শর্ত ছিল, আসামিদের কাছ থেকে কোনো টাকা বা জরিমানা নেওয়া যাবে না, এবং আমার হাতে কোনো অর্থ আসবে না।”
তবে তিনি অভিযোগ করেন, এরপরও ইতিহাস বিভাগের এক শিক্ষার্থী টাকার প্রস্তাব নিয়ে তার কাছে আসে এবং একটি আপত্তিকর সমঝোতার প্রস্তাব দেয়। তিনি তখনই বিষয়টি সংশ্লিষ্ট দফতরে জানান। এরপর ২২ মে ফয়সাল জানতে পারেন, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সমন্বয়ক ওমর শরীফ মামলার আসামিদের কাছ থেকে ৮ লক্ষ টাকা দাবি করেছেন।
ফয়সাল আরও বলেন, “টাকা চাওয়ার সময় কেউ একজন অডিও রেকর্ড করে রেখেছিলেন, এবং সেই রেকর্ড আমার কাছে এসেছে। সেখানে ওমর শরীফ স্পষ্টভাবে বলেন, মামলার বাদী ও ছাত্রদলের রাকিব ভাইকে টাকা থেকে ভাগ দিতে হবে।”
এদিকে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হওয়া এক অডিও ক্লিপেও ওমর শরীফকে বলতে শোনা গেছে, “মামলা তুলে নিতে হলে ৮ লক্ষ টাকা দিতে হবে। ছাত্রদলসহ অন্যান্য সংগঠনকে ম্যানেজ করতে হবে। নগদ না দিয়ে এই টাকা ক্রিপ্টোকারেন্সিতে দিলেই হবে।”
এ বিষয়ে সরাসরি প্রশ্ন করা হলে ওমর শরীফ বলেন, “এ বিষয়ে আমি এখন কিছু বলতে চাই না। পরে কথা বলব।”
প্রসঙ্গত, ২৫ জানুয়ারির ঘটনার সূত্রপাত ইতিহাস বিভাগের ছাত্র ও নিষিদ্ধঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের কর্মী শরিফুল ইসলাম সোহাগকে কেন্দ্র করে। সেদিন সোহাগ বিশ্ববিদ্যালয়ে পরীক্ষা দিতে এলে সমন্বয়করা তাকে পুলিশের হাতে তুলে দিতে চায়। তখন ইতিহাস বিভাগের কিছু শিক্ষার্থী সোহাগকে ছাড়িয়ে নিতে গেলে ধস্তাধস্তি ও সংঘর্ষ বাঁধে। ওই ঘটনায় সমন্বয়ক ওমর শরীফ, সাংবাদিক আতিক ফয়সালসহ কয়েকজন আহত হন।