মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ-শ্রীমঙ্গল সড়কের লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান এলাকায় ভয়াবহ ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। শনিবার (৩১ মে) রাত ৯টার দিকে লাউয়াছড়ার বাগরাবাড়ি এলাকায় মুখোশধারী সশস্ত্র ডাকাতদল গাছ ফেলে পথ আটকে একে একে প্রায় ২০ থেকে ২৫টি সিএনজি অটোরিকশা, প্রাইভেট কার ও পিকআপের যাত্রীদের উপর হামলা চালায়। এতে কমপক্ষে ১৫ জন আহত হন, যাদের মধ্যে আটজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাতে জানা যায়, ডাকাতির সময় মুখোশ পরা ১৫-২০ জন দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত ডাকাত দল এক ঘণ্টাব্যাপী সড়কে তাণ্ডব চালায়। গাড়িগুলোর চালক ও যাত্রীদের মারধর করে মোবাইল ফোন, নগদ অর্থ এবং অন্যান্য মূল্যবান সামগ্রী লুট করে নেয় তারা।
আহতদের মধ্যে পরিচয় পাওয়া গেছে আরিফুল ইসলাম, ওয়াজিদ মিয়া, অপু দাস, মেরাজ মিয়া, সুমিত আলী, নিবাস পাল, সালেক মিয়া ও তাহমিদ নামের আটজনের। বাকিদের পরিচয় এখনো জানা যায়নি।
আহত ওয়াজিদ মিয়া বলেন, “আমরা বনের মধ্যে ঢুকতেই হঠাৎ দেখি রাস্তার মাঝখানে গাছ ফেলে রাখা। তারপরেই ১৫-২০ জন ডাকাত এসে আমাদের ঘিরে ফেলে। তাদের কারও মুখ দেখা যায়নি, মুখোশ পরে ছিল। হাতে ছিল দা ও চাপাতি।”
শ্রীমঙ্গল থেকে ফেরা অপু দাস বলেন, “প্রাইভেট কারটি নিয়ে আমরা কমলগঞ্জ থেকে ফিরছিলাম। হঠাৎ গাছ ফেলে রাস্তায় আটকে দেয়। এরপরই আমাদের উপর হামলা করে মালামাল নিয়ে যায়।”
ডাকাতদের হামলার শিকার ওষুধ কোম্পানির বিক্রয় প্রতিনিধি আরিফুল ইসলাম জানান, ডাকাতরা অস্ত্র দেখিয়ে তার কাছ থেকে মোবাইল ও নগদ টাকা লুট করে নেয়।
আহতদের মধ্যে আটজনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন কমলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স (Kamalganj Upazila Health Complex)–এর চিকিৎসক মো. কামরুজ্জামান।
কমলগঞ্জ থানা (Kamalganj Police Station)-র ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু জাফর বলেন, “ঘটনার খবর পেয়ে আমরা দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছাই এবং আহতদের উদ্ধার করি। ঘটনার তদন্ত চলছে এবং অপরাধীদের ধরতে অভিযান শুরু হয়েছে।”
এই ঘটনায় এলাকাবাসী ও পর্যটকদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। দেশের অন্যতম প্রাকৃতিক ভ্রমণগন্তব্য লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানের ভেতরে এমন সংঘবদ্ধ ডাকাতির ঘটনা নতুন করে নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে।