ভারতের উত্তরপ্রদেশ (Uttar Pradesh) রাজ্যের আগ্রা জেলায় এক হৃদয়বিদারক দুর্ঘটনায় যমুনা নদীতে ডুবে মারা গেছে ৬ কিশোরী। মঙ্গলবার সিকান্দরা থানা এলাকার কাছে ঘটেছে এই মর্মান্তিক ঘটনা। প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে জানা যায়, নদীর তীরে বন্ধুদের সঙ্গে খেলতে খেলতে তারা মোবাইল ফোনে রিলস বানাচ্ছিল। এরপর ধীরে ধীরে পানিতে নেমে পড়লে হঠাৎ স্রোতের টানে ভেসে যায় সবাই।
আগ্রা জেলার প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের উদ্ধৃতি দিয়ে এনডিটিভি (NDTV)-র প্রতিবেদন জানিয়েছে, ছয় কিশোরীই কাছাকাছি কৃষিজমিতে কাজ শেষে গরমে ক্লান্ত হয়ে নদীর ধারে গিয়ে নামে। প্রাথমিকভাবে তারা নদীর কিনারে ছিল এবং ফোনে ভিডিও ধারণে ব্যস্ত ছিল। তবে হঠাৎ করেই তারা গভীর পানিতে চলে যায়। প্রথমেই চারজন কিশোরী ডুবে যায়। বাকি দু’জনকে স্থানীয়রা উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়ার পর সেখানেও তাদের মৃত্যু হয়।
মারা যাওয়া ছয় কিশোরীই স্থানীয় একটি গ্রামের বাসিন্দা। নাম প্রকাশ না করা শর্তে এক আত্মীয় বলেন, “ওরা খেতে কাজ করছিল। প্রচণ্ড গরমে নদীতে গিয়ে একটু আরাম নিতে চেয়েছিল। কে জানত এটাই হবে শেষবারের মতো!” নদীর পাড়ে ছুটে যান আতঙ্কিত গ্রামবাসীরা। পুরো গ্রামজুড়ে নেমে আসে শোকের ছায়া।
দুর্ঘটনার খবর পেয়ে স্থানীয় প্রশাসন, জেলা প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এবং পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়। প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে সবরকম সহায়তা দেওয়া হবে। পাশাপাশি কীভাবে এই ঘটনা ঘটল, তা জানতে একটি তদন্তও শুরু হয়েছে।
একজন প্রশাসনিক কর্মকর্তা বলেন, “আমরা শোকসন্তপ্ত পরিবারগুলোর পাশে আছি। এই দুর্ঘটনা খুবই দুঃখজনক। পরবর্তীতে যেন এমন ঘটনা না ঘটে, সেজন্য পদক্ষেপ নেওয়া হবে।”
এই ঘটনায় সামাজিক মাধ্যমে শুরু হয়েছে তীব্র আলোড়ন। অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন, অপ্রশিক্ষিত কিশোর-কিশোরীরা এমন ঝুঁকিপূর্ণ স্থানে কীভাবে রিলস ভিডিও করতে যায়? আবার অনেকে এই ঘটনার পেছনে তরুণ সমাজের ডিজিটাল আসক্তিকে দায়ী করছেন।
কিশোরীদের আকস্মিক মৃত্যুতে গোটা এলাকা এখন নিস্তব্ধ। অনেকে এখনও বিশ্বাস করতে পারছেন না, মাত্র কিছু সময়ের এক ভুলে হারিয়ে গেল ছয়টি প্রাণ, যাদের জীবনের শুরুই হয়নি ঠিকভাবে।