তিন দিন অবরুদ্ধ থাকার পর অবশেষে পথসভা করেছেন নুরুল হক নুর (Nurul Haque Nur)। আজ সোমবার (১৬ জুন) যশোরের বকুলবাড়িয়া ইউনিয়নের বটতলা বাজারে সভাটি হলেও, অনুষ্ঠানটি একপর্যায়ে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। স্থানীয় বিএনপি (BNP) নেতাকর্মীদের তীব্র সমালোচনার মুখে পড়তে হয় নুরকে।
জানা গেছে, পথসভা শুরুর আগেই বিএনপির কয়েকজন নেতা নুরের উপস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। তারা দাবি করেন, নুরের দলে এমন কিছু ব্যক্তি রয়েছেন যারা অতীতে ছাত্রলীগ-যুবলীগ পরিচয়ে বিএনপির অফিসে হামলা চালিয়েছিল। এর জেরে গণ অধিকার পরিষদ (Gonodhikar Parishad) ও স্থানীয় বিএনপির নেতাদের মধ্যে সরাসরি বাকবিতণ্ডা শুরু হয়।
একটি ভিডিওতে দেখা যায়, বকুলবাড়িয়া ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি হুমায়ুন কবির নুরকে সরাসরি বলেন, “আপনাদের দলে এমন অনেক আছে যারা ২০২৩ সালে আমাদের অফিস ভেঙেছে। তারা আগে ছাত্রলীগ-যুবলীগ ছিল, এখন আপনার দলে ঢুকেছে।” জবাবে নুর বলেন, “এসআই ছবি ও ভিডিও দিলে আমরা প্রমাণ সাপেক্ষে তাদের বহিষ্কার করব। আমাদের দলে কোনো অফিস ভাঙচুরকারীদের ঠাঁই হবে না।”
এই উত্তপ্ত মুহূর্তে হুমায়ুন কবির আরও বলেন, “আপনার সঙ্গে আমাদের বিরোধ নেই। তবে অনুরোধ করব, আপনার নেতাকর্মীরা যেন অন্য দলকে সম্মান করে। আপনি একটা দলের নেতা—আপনার সম্মান থাকবে, তবে পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধও থাকতে হবে।”
পরিস্থিতি শান্ত করতে হুমায়ুন কবির তার ব্যক্তিগত সম্পত্তির একটি ঘটনার উল্লেখ করেন, “একদিন আমাদের এলাকায় দুই পক্ষের মানুষের মিটিং চলছিল, তখন আপনার দলের একজন কর্মী মোটরসাইকেল নিয়ে চলে যায়, ছোট ছোট ঘটনার মাধ্যমে বড় কিছু তৈরি হয়। তাই বলছি, আপনার কর্মীদের আপনি বুঝান।”
পরে বিএনপির আরেক সদস্য বলেন, “আপনি আসার সময় আমরা সালাম দিয়েছি, আপনাকে অফিসে বসার আমন্ত্রণ দিয়েছি, এখন আসেন বসেন।” উত্তরে অন্য এক নেতা বলেন, “আপনি বলেন, আওয়ামী লীগের তালিকা আমরা দেব।” তখন নুর স্পষ্ট করে বলেন, “বিএনপির সঙ্গে আমাদের একটা বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক আছে। সারা দেশে আমরা নেতাকর্মীদের এই বার্তাই দিচ্ছি।”
উল্লেখ্য, গত কয়েকদিন ধরে বকুলবাড়িয়ায় অবস্থান করলেও রাজনৈতিক প্রতিকূলতায় নুর পথসভা করতে পারেননি। এদিনের সভাটি ছিল তার ফেরার ইঙ্গিত, তবে স্থানীয় রাজনীতির টানাপড়েনে সেই প্রত্যাবর্তনও রঙিন হয়নি।
