“আগে সংস্কার, পরে গণতন্ত্র”—এই চিন্তা-ভাবনাকে সরাসরি প্রত্যাখ্যান করলেন বিএনপি (BNP) জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান (Dr. Abdul Moyeen Khan)। তার মতে, গণতন্ত্র ছাড়া সংস্কার ও বিচার কখনোই প্রকৃত অর্থে সম্ভব নয়।
শনিবার (১২ জুলাই) দুপুরে রাজশাহীর ঐতিহ্যবাহী ভুবন মোহন পার্কে বিএনপির নতুন সদস্য সংগ্রহ ও নবায়ন কর্মসূচির ফরম বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এই মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, “বিগত স্বৈরাচারী সরকার যেমন বলত আগে উন্নয়ন, পরে গণতন্ত্র—আজও কেউ যেন না বলে, আগে সংস্কার, আগে বিচার, পরে গণতন্ত্র, পরে নির্বাচন। এটি শুনতে চাই না। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছ থেকেও না।”
আওয়ামী লীগকে পথভ্রষ্ট রাজনৈতিক দল হিসেবে উল্লেখ করে ড. মঈন খান বলেন, “এই দলের পরিণতি হয়েছে—দেশ ছেড়ে পালিয়ে যেতে হয়েছে। আজ পর্যন্ত একটিও আওয়ামী লীগ নেতা বা কর্মী সৎ সাহস নিয়ে বলেনি যে তারা অন্যায় করেছে, তারা ক্ষমা চায়। একবারও তারা জাতির কাছে অনুশোচনা প্রকাশ করেনি।”
তিনি বলেন, “আমরা জানি দেশে সংস্কারের প্রয়োজন আছে। সুবিচার দরকার। কিন্তু সংস্কার ও বিচার কোনো একদিনে ঘটে না। এটি একটি চলমান প্রক্রিয়া। আজ সংস্কার করে দিলাম আর সব হয়ে গেল—এমনটা ভাবা ভুল।”
ড. মঈন খান বলেন, “বিএনপি কখনো স্বৈরাচারের রাজনীতিতে বিশ্বাস করে না। আমরা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করি, আইনের শাসনে বিশ্বাস করি, মানুষের ভোটে বিশ্বাস করি। আমরা নিয়মের বাইরে যেতে চাই না। আগামী কয়েক মাস আমরা ধৈর্য ধরে থাকব।”
বিএনপি’র রাজনৈতিক অবস্থান তুলে ধরে তিনি বলেন, “আমরা কারো ওপর কিছু চাপিয়ে দিতে চাই না। কারণ সেটা গণতন্ত্র নয়, সেটা স্বৈরতন্ত্র। বিএনপি একটি ভিন্নধর্মী দল, যারা মানুষের শক্তিতে এবং তাদের রায়ে রাষ্ট্র গঠন করতে চায়।”
তিনি আরও বলেন, “বাংলাদেশে বহু রাজনৈতিক দল এসেছে, গেছে। কিন্তু আওয়ামী লীগ যেভাবে বিচ্যুত হয়েছে, তাদের পরিণতিও জনগণ দেখেছে। আজ ১১ মাসেও কেউ বলেনি তারা ভুল করেছে, ক্ষমা চায়।”
এই বক্তব্যের মধ্য দিয়ে ড. মঈন খান বর্তমান পরিস্থিতিকে একধরনের ‘গণতন্ত্রের বাণিজ্য’ হিসেবেই দেখিয়েছেন, যেখানে প্রক্রিয়াকে অগ্রাধিকার দিয়ে মূলত ভোটাধিকার ও জনপ্রতিনিধিত্ব থেকে মনোযোগ সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। তিনি সাফ জানিয়ে দেন—গণতন্ত্র আগে, সংস্কার পরে।