জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) যুগ্ম সদস্য সচিব সালেহ উদ্দিন সিফাত (Saleh Uddin Sifat) ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেছেন, গোপালগঞ্জে সাম্প্রতিক সহিংসতার সব বৈশিষ্ট্য থাকা সত্ত্বেও বাংলাদেশের মুজিববাদী বুদ্ধিজীবী মহল এবং সাংস্কৃতিক এলিটরা এখনো হামলাকারীদের ‘মব’ বলতে পারছে না। বরং, উল্টো এনসিপির ওপর দায় চাপানো হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন তিনি।
বৃহস্পতিবার (১৭ জুলাই) সকালে নিজের ফেসবুক পোস্টে সিফাত লিখেছেন, “গতকাল মুজিববাদী জঙ্গিরা ‘জুলাই পদযাত্রা’ উপলক্ষে গোপালগঞ্জে সহিংসতা চালায়। তারা পুলিশের গাড়ি পুড়িয়ে দেয়, ইউএনও’র গাড়িতে হামলা করে, পথসভার মঞ্চ-চেয়ার ভাঙে এবং রাস্তা কেটে-বাধা সৃষ্টি করে। ফেরার পথে আমাদের গাড়িতে ইট-পাটকেল ও ককটেল ছুঁড়ে অতর্কিত হামলা চালানো হয়।” তাঁর দাবি, এনসিপির নেতাকর্মীরা এই হামলায় আহত হয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, “এইসব ঘটনা একটি মব বা সংঘবদ্ধ উগ্র হামলার সকল বৈশিষ্ট্য পূরণ করে। তবুও দেশের তথাকথিত মুজিববাদী ইউনিয়নের কাছে তারা ‘মব’ নয়। বরং, ‘মব’ হিসেবে চিহ্নিত করা হচ্ছে চট্টগ্রামের বিপ্লবী ছাত্র-তরুণদের, যারা একজন খুনি লীগকে ধরে পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছে।”
সিফাত এ মন্তব্যের পেছনে দেশের কিছু শীর্ষস্থানীয় সাংবাদিকদের চিন্তাভাবনাকেও দায়ী করেছেন। তাঁর ভাষায়, “এ দেশের বৃহৎ সাংবাদিকগণ মনে করেন, চোখের সামনে একজন ফ্যাসিস্ট খুনি ঘুরে বেড়ালেও একজন সাধারণ নাগরিকের তাকে আটক করার অধিকার নেই।”
ফেসবুক পোস্টে এনসিপির এই নেতা আরও লিখেছেন, “গতকালের ঘটনাগুলো ফাঁস হওয়ার পর মুজিববাদী কালচারাল ছানাপোনাদের মুখোশ খুলে পড়ছে। আমরা এখন এমন এক ফ্যাসিবাদ-উত্তর বাংলাদেশে দাঁড়িয়ে যেখানে এদের আর মেইনস্ট্রিম হতে দেওয়া হবে না।”
সরকার ও ক্ষমতাসীন দলের বিরুদ্ধে সরাসরি আক্রমণ করে তিনি বলেন, “ওদের আফসোস এই যে, খুনি হাসিনা দিল্লি পালিয়ে না গিয়ে যদি গোপালগঞ্জে আশ্রয় নিতেন, তাহলে এদের জুলাই অভ্যুত্থানের পক্ষের লোক হওয়ার নাটক করতে হতো না। এখন আবার মুখে জোর, আর মুজিববাদের খবর খোঁজার অভিনয়।”
সিফাতের এই পোস্ট দেশের রাজনীতিতে নতুন করে বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। একদিকে তার বক্তব্য থেকে স্পষ্ট ক্ষোভ ও অভিযোগ উঠে এসেছে, অন্যদিকে এটি বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও মতাদর্শিক বিভক্তিকে আরও উন্মোচিত করেছে।