নির্বাচনের জন্য একটি সম্ভাবনাময় পরিবেশ গড়ে উঠলেও, সেটিকে ব্যর্থ করতে চলছে সুপরিকল্পিত ষড়যন্ত্র—এমনই আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর (Mirza Fakhrul Islam Alamgir)। বৃহস্পতিবার (১২ জুলাই) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (University of Dhaka)-এর টিএসসি মিলনায়তনে আয়োজিত জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের শহীদ স্মরণ সভায় বিএনপির মহাসচিব এ মন্তব্য করেন।
সভায় বক্তব্যে তিনি বলেন, “নির্বাচনের সময়সূচি ঘোষণার আগেই ষড়যন্ত্রকারীরা সক্রিয় হয়ে উঠেছে। লন্ডন বৈঠকের পর থেকেই বিএনপিকে ফাঁদে ফেলার চেষ্টা চলছে। তারা চায় আমরা উত্তেজিত হয়ে প্রতিক্রিয়া দেখাই, যেন তাদের ফাঁদে পা দিই। কিন্তু আমরা সেই ভুল করব না।”
নেতাকর্মীদের উদ্দেশে ফখরুল আহ্বান জানান, “ধৈর্যের সঙ্গে পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে হবে। ফাঁদে পা না দিয়ে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার আন্দোলন চালিয়ে যেতে হবে।”
তিনি ২০২৪ সালের জুলাই মাসকে বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক আন্দোলনের ইতিহাসে এক নতুন সম্ভাবনার সূচনা হিসেবে উল্লেখ করেন। তার ভাষায়, “‘৭১-এর মুক্তিযুদ্ধ ও ’৯০-এর স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনের পর এবার জনগণ আবারও গণতন্ত্রের পথে যাত্রা শুরু করেছে। এই বিজয়ের কৃতিত্ব কোনো একক গোষ্ঠীর নয়, পুরো জাতির।” তিনি বলেন, “এখন অনেকে একক কৃতিত্ব দাবি করছেন, কিন্তু প্রকৃত জয় ছিল সাধারণ মানুষের।”
বিএনপি (BNP)-র ভূমিকার কথা তুলে ধরে মির্জা ফখরুল দাবি করেন, “দেশের বড় বড় অর্জন বিএনপির হাত ধরেই এসেছে। আমরা কখনোই ফ্যাসিবাদের কাছে মাথা নত করিনি। দুই দশকের বেশি সময় ধরে আন্দোলন করে যাচ্ছি, যেখানে ২০ হাজারের বেশি নেতা-কর্মী বিচারবহির্ভূত হত্যার শিকার হয়েছেন।”
তিনি স্মরণ করিয়ে দেন, জুলাই আন্দোলনে ছাত্রদলের ১৪২ জন কর্মী শহীদ হয়েছেন। কিন্তু এখনো তাদের নাম সরকারিভাবে গেজেটভুক্ত হয়নি, আহতরা পাননি প্রাপ্য সহায়তা। দলীয় শীর্ষ নেতৃত্ব এই বিষয়গুলো গুরুত্ব দিয়ে দেখবে বলেও আশ্বস্ত করেন।
সভায় তারেক রহমান (Tarique Rahman)-কে নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে ‘কুরুচিপূর্ণ প্রচার’ চালানো হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন বিএনপি মহাসচিব। তিনি বলেন, “এই অপপ্রচারের পেছনে আছে ভয়—কারণ তারেক রহমান এখন জাতীয় নেতা হয়ে উঠেছেন। এই সত্যটিই তারা সহ্য করতে পারছে না।”
তিনি সভা শেষ করেন একটি সরল কিন্তু তীব্র আহ্বান দিয়ে—“সবাই সজাগ থাকুন, কারণ গণতন্ত্রের এই যাত্রায় পিছিয়ে যাওয়ার আর সুযোগ নেই।”