মহসিন কলেজের ছাত্রলীগ নেতাকে ছাড়িয়ে নিতে থানায় ছাত্রশিবির , ছাত্রদলের ধাওয়া খেয়ে এলাকা ছাড়া

চট্টগ্রামের মহসিন কলেজ (Mohsin College) কেন্দ্র করে ফের উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে ছাত্ররাজনীতি। কলেজ শাখা ছাত্রলীগ (Chhatra League) নেতা মোহাম্মদ আরিফকে আটক করে পুলিশে দেয় ছাত্রদল (Chhatra Dal) নেতাকর্মীরা। কিন্তু পরিস্থিতি জটিল হয়ে পড়ে যখন ওই নেতার পক্ষে তদবির করতে চকবাজার থানায় হাজির হয় ছাত্রশিবির (Islami Chhatra Shibir) নেতাকর্মীরা। শুরু হয় উত্তপ্ত বাক্যবিনিময়, এরপর ছড়িয়ে পড়ে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, ককটেল বিস্ফোরণ ও সংঘর্ষ।

সোমবার (২১ জুলাই) রাত ১১টার দিকে চট্টগ্রাম নগরীর চকবাজার থানায় এই অস্থিরতা শুরু হয়, যা চলে গভীর রাত পর্যন্ত। এই রিপোর্ট লেখা সময় রাত ১টা পর্যন্ত অন্তত ৬ রাউন্ড ককটেল বিস্ফোরণের তথ্য পাওয়া গেছে।এলাকায় টান টান উত্তেজনা বিরাজ করলেও, ছাত্রদলের স্থানীয় নেতারা জানিয়েছেন , এই মুহূর্তে এলাকা শান্তি আছে, ছাত্রশিবিরের নেতারা চকবাজার এলাকা ছেড়ে চলে গেছেন।

আটক হওয়া ছাত্রলীগ নেতা মোহাম্মদ আরিফ মহসিন কলেজ ছাত্রলীগের নেতা ও মিজান গ্রুপের অনুসারী। ছাত্রদলের দাবি, ২০২২ সালে আরিফ ছাত্রদল সদস্য সচিব মো. জাহাঙ্গীরকে কুপিয়েছিলেন। সেই ঘটনার প্রমাণসহ তাকে থানায় হস্তান্তর করা হয়।

ছাত্রদলের অভিযোগ, এরপর মহসিন কলেজ ছাত্রশিবিরের সাধারণ সম্পাদক ইয়াসিন ও অন্যান্যরা থানায় উপস্থিত হয়ে আরিফকে ছাড়িয়ে নেওয়ার চেষ্টা চালায়। এ নিয়ে কথা কাটাকাটি হয় এবং এক পর্যায়ে শিবির নেতাকর্মীরা ছাত্রদল নেতাকর্মীদের উপর হামলা চালায়। মহসিন কলেজ ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফ হোসাইন জুমন অভিযোগ করেন, “ছাত্রলীগের অপরাধীদের পুনর্বাসন করছে শিবির। তাদের পক্ষ নিয়ে থানায় হামলা চালিয়ে আমাদের নেতাকর্মীদের মারধর করেছে তারা।”

ঘটনার পর থেকেই চকবাজার এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার পাশাপাশি ককটেল বিস্ফোরণের শব্দে এলাকা থমথমে হয়ে পড়ে। স্থানীয় পুলিশ কর্মকর্তারা জানান, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে এবং ঘটনাটি তদন্তাধীন।

ওদিকে, ছাত্রদলের অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে শিবির। এক সাংবাদিক গ্রুপে পাঠানো বার্তায় চট্টগ্রাম উত্তর মহানগর শিবিরের প্রচার সম্পাদক সিরাজী মানিক পাল্টা দাবি করেন, “ছাত্রদল-যুবদলের নেতৃত্বে চট্টগ্রাম কলেজ ও মহসিন কলেজের শিক্ষার্থীদের উপর হামলা হয়েছে। সংঘর্ষ হয়েছে ছাত্রদল ও পুলিশের মধ্যেও।”

ছাত্রশিবিরের সাধারণ সম্পাদক ইয়াসিনের পক্ষ থেকে কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তাকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি সাড়া দেননি।

চকবাজার থানার ওসি জাহেদুল ইসলাম জানান, “আরিফ নামে একজনকে থানায় আনা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে কোনো মামলা নেই। পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা চলছে।” তবে থানার তদন্ত কর্মকর্তা রাত সাড়ে ১২টার দিকে জানান, “পরিস্থিতি সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। কোনো পক্ষ নেই, ধাওয়া করবে কারা?”

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *