রাজনীতিবিদ ও সাবেক সংসদ সদস্য গোলাম মাওলা রনি (Golam Mawla Rony) সম্প্রতি এক টক শোতে বিস্ফোরক মন্তব্য করে বলেছেন, এক বছরের মধ্যেই ‘বিপ্লবী’দের চরিত্র পুরোপুরি বদলে গেছে। গত বছর যাদের দেখে মনে হতো তারা বিপ্লবের প্রতীক—তাদের এখন দেখে মনেই হয় না তারা কোনোদিন আদর্শ নিয়ে পথে নেমেছিল।
রনি বলেন, “গত বছর এই সময়টায় নাহিদ, পাটোয়ারী, আসিফ মাহমুদ—যাদের দেখলেই মনে হতো এরা সত্যিকার অর্থেই বিপ্লবী। তাদের শরীরের মাসেল, গালের চোয়াল, চোখেমুখের দৃঢ়তা—সব কিছুই বলত তারা আদর্শবান। কিন্তু এখন? এখন সেই ছবিগুলো দেখলে মনে হয়—মোটাতাজা, থলথলে মাংস, লোভী চেহারা, এবং তাদের গলায় শোনা যায় ক্ষমতার লালসা। এক বছরেই তারা সেই বিপ্লবী চরিত্রটা পুরো নষ্ট করে দিয়েছে।”
তিনি বলেন, “আপনি এখন যদি ২০২৫ সালের আগস্টের চিত্র বিশ্লেষণ করেন, তাহলে তা একেবারে ভিন্ন বাস্তবতায় দাঁড়ায়। এই সময়ের ব্যাখ্যা করতে গেলে অনেক কঠিন কথা বলতে হয়। কিন্তু যদি ২০২৪ সালের সেই সময়টা ভাবেন—যে সময় বাঙালি জাতি বারবার জেগে উঠেছিল, তার মধ্যে অন্যতম ছিল এই সময়টা। আর সেসময়ে তারা সফলও হয়েছিল।”
রনি আরও বলেন, “দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়ও এতসংখ্যক মানুষ একইসঙ্গে এক দাবিতে জেগে ওঠেনি। তখন ১৮ কোটি বাঙালির সঙ্গে যুক্ত হয়েছিল পশ্চিমবঙ্গের আরও প্রায় ১০-১২ কোটি বাংলা ভাষাভাষী মানুষ। পাশাপাশি আসাম ও সেভেন সিস্টার্সের জনগণও যুক্ত হয়েছিল আন্দোলনের সঙ্গে। এমনকি ভারত সরকারের দক্ষিণ ও উত্তর ব্লকের এলিট শ্রেণিও সেই সময় আমাদের প্রতি সহানুভূতিশীল ছিল।”
রনি বলেন, “আমি যতটুকু ইতিহাস পড়েছি, তাতে আমার মনে হয় কমপক্ষে ৫০ কোটি মানুষ তখন এই আন্দোলনের পক্ষে দাঁড়িয়েছিল। এমন গণজাগরণ ইতিহাসে বিরল।”
তার বক্তব্যের মধ্যে ছিল একরাশ হতাশা, কিন্তু একইসঙ্গে একসময়কার ঐক্য, সাহস আর সম্ভাবনার কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে একটি সতর্কবার্তাও। এক বছরের ব্যবধানে আদর্শচ্যুতি কীভাবে ঘটে, সেই বাস্তবতাই তুলে ধরেছেন তিনি।