মঞ্চ ৭১-এর অনুষ্ঠানে অনুমতি ছাড়া ড. কামালের নাম রাখায় গণফোরামের প্রতিবাদ

রাজধানীর রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে ব্যানারে অনুমতি ছাড়া ড. কামাল হোসেন (Dr. Kamal Hossain)-এর নাম ব্যবহার করায় তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে গণফোরাম (Gono Forum)। বৃহস্পতিবার (২৮ আগস্ট) গণফোরামের তথ্য ও গণমাধ্যম সম্পাদক টি এইচ এম জাহাঙ্গীর স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ নিন্দা জানানো হয়।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘মঞ্চ ৭১’ নামের একটি সংগঠন ওই দিন সকালে রিপোর্টার্স ইউনিটির শফিকুল কবির মিলনায়তনে আয়োজিত সেমিনারের ব্যানারে অনুমতি ছাড়াই ড. কামাল হোসেনের নাম ব্যবহার করে। বিষয়টি নিয়ে গণফোরামের কেন্দ্রীয় ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সিনিয়র আইনজীবী সুব্রত চৌধুরী এবং সাধারণ সম্পাদক ডা. মিজানুর রহমান তীব্র প্রতিবাদ জানান। তাদের ভাষ্য, ড. কামাল হোসেন বা গণফোরামের সঙ্গে মঞ্চ ৭১ নামের ওই সংগঠনের কোনো সম্পৃক্ততা নেই, অথচ তাদের নাম ব্যবহার করে জনমনে বিভ্রান্তি ছড়ানো হয়েছে।

উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার (২৮ আগস্ট) সকালে ‘আমাদের মহান স্বাধীনতাযুদ্ধ এবং বাংলাদেশের সংবিধান’ শীর্ষক গোলটেবিল আলোচনা আয়োজন করে মঞ্চ ৭১। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে রাখা হয়েছিল ড. কামাল হোসেনকে। তবে তিনি ও সভার অন্যতম আয়োজক আইনজীবী জেড আই খান পান্না দেরিতে পৌঁছানোয় আলোচনার শুরুতে বিলম্ব হয়।

বেলা ১১টার দিকে অনুষ্ঠান শুরু হলে এতে যোগ দেন ইতিহাসবিদ ড. সৈয়দ আনোয়ার হোসেন, অধ্যাপক মেসবাহ কামাল, সাংবাদিক মাহবুব কামাল, সাবেক সংসদ সদস্য আবদুল লতিফ সিদ্দিকী (Abdul Latif Siddique), ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অধ্যাপক শেখ হাফিজুর রহমান কার্জনসহ আরও অনেকে। অনুষ্ঠানটির সভাপতিত্ব করেন অধ্যাপক আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বীর প্রতীক।

আলোচনায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে অধ্যাপক কার্জন বলেন, “একটা শক্তি মুক্তিযুদ্ধকে, একাত্তরকে চব্বিশের মুখোমুখি দাঁড় করাতে চায়। তারা বাংলাদেশের বিরোধী শক্তি। তারা সংবিধান ছুড়ে ফেলতে চায়। বাংলাদেশকে ধ্বংস করার পেছনে এই শক্তি জামায়াত-শিবির। আর এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে কিছু বিভ্রান্ত বাম তাত্ত্বিক।”

তার বক্তব্য শেষ হতেই সভাস্থলে প্রবেশ করে একদল যুবক। তারা ‘আবু সাঈদ মুগ্ধ, শেষ হয়নি যুদ্ধ’, ‘জুলাইয়ের হাতিয়ার, গর্জে উঠুক আরেকবার’, ‘লীগ ধর, জেলে ভর’—এমন সব স্লোগান দিতে থাকে। নিজেদের “জুলাই যোদ্ধা” পরিচয় দেওয়া ওই ব্যক্তিদের কেউ কেউ লাঠিসোঁটা হাতে নিয়ে মঞ্চে উঠে পড়ে এবং একপর্যায়ে দরজা বন্ধ করে দেয়। এতে আয়োজকদের সঙ্গে হাতাহাতি ও লাঞ্ছনার ঘটনাও ঘটে।

তাদের লক্ষ্য ছিল বিশেষ করে লতিফ সিদ্দিকীকে কেন্দ্র করে। তাকে উদ্দেশ করে তারা চিৎকার করে বলে, “তুই ফ্যাসিস্ট পুনর্বাসন করতে আসছিস। নাস্তিক কোথাকার! তুই হজ নিয়ে কটূক্তি করিস।” পরিস্থিতি দ্রুত উত্তপ্ত হয়ে ওঠে।

অবশেষে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ হস্তক্ষেপ করে। নিরাপত্তার স্বার্থে লতিফ সিদ্দিকী ও অধ্যাপক কার্জনসহ অন্তত ১০ জনকে গোয়েন্দা পুলিশের কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে তাদের সবাইকে ডিবি হেফাজতে রাখা হয়।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *