রাজনৈতিক ঐক্য প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্যে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন (National Consensus Commission) ইতোমধ্যে দুই দফায় বিভিন্ন দলের সঙ্গে বৈঠক করেছে। এর পাশাপাশি অনানুষ্ঠানিক বৈঠকও অনুষ্ঠিত হয়েছে। তবে কমিশনের পক্ষ থেকে স্পষ্ট জানানো হয়েছে, সামনে যে তৃতীয় ধাপের সংলাপ অনুষ্ঠিত হবে, সেখানে জুলাই সনদ বাস্তবায়নের পথ নিয়ে কোনো আলোচনা হবে না। অনানুষ্ঠানিক বৈঠকগুলো পর্যালোচনা করেই এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
কমিশনের ভাষ্যে, জুলাই সনদ তৈরিই তাদের মূল দায়িত্ব। বাস্তবায়নের দায়িত্ব সরকারের ওপরেই বর্তাবে। কমিশন বলছে, ‘আমরা জুলাই সনদ তৈরি করব, কিন্তু বাস্তবায়ন করবে সরকার।’ দলগুলোর কাছ থেকে যে সুপারিশ ও মতামত পাওয়া যাচ্ছে, সেগুলো বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আলোচনায় কাজে লাগানো হবে বলে জানানো হয়েছে।
আগামী সপ্তাহ থেকে তৃতীয় দফার আলোচনার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। তবে বেশ কয়েকটি রাজনৈতিক দলের নেতারা জানিয়েছেন, এ আলোচনায় তাঁদের বিশেষ আগ্রহ নেই। তাঁদের অভিযোগ, অনেক বিষয়ে ঐকমত্য গড়ে তোলা সম্ভব হয়নি, কেউ ছাড় দিতে রাজি নয়। বরং কমিশনের সঙ্গে বৈঠক করতে গিয়ে দলগুলোর মধ্যে বিভাজন আরও তীব্র হয়েছে। কিছু ক্ষেত্রে আদর্শগত সংকট তৈরি হয়েছে। আবার গুরুত্বপূর্ণ কিছু ইস্যুতে কমিশন কোনো আলোচনা ছাড়াই খসড়া জাতীয় জুলাই সনদে সিদ্ধান্ত যুক্ত করেছে—যা তাঁদের মতে, চাপিয়ে দেওয়া সিদ্ধান্তের মতো মনে হয়েছে।
কমিশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়, জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫-এর খসড়া চূড়ান্ত করতে ইতোমধ্যে একাধিক বৈঠক হয়েছে। সেখানে সনদ বাস্তবায়নের উপায় ও পদ্ধতি নিয়েও আলোচনা হয়েছে। গতকাল কয়েকটি দল নিজেদের মতামত জমা দিয়েছে। এসব প্রস্তাব বিবেচনায় এনে শিগগিরই বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে বৈঠক করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এ পর্যন্ত ২৮টি দলের সঙ্গে অনানুষ্ঠানিক বৈঠক করেছে ঐকমত্য কমিশন। এর মধ্যে ২৬ দলের কাছ থেকে সনদ বাস্তবায়ন পদ্ধতি ও প্রক্রিয়া নিয়ে মতামত লিখিত আকারে পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে কমিশন।