সমাজকল্যাণ এবং মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ (Sharmin S Murshid) দেশবাসীর উদ্দেশে আবেগঘন আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, “দেশটাকে আর টুকরো টুকরো করবেন না। আমাদের ঐক্যের প্রয়োজন, ভালোবাসার প্রয়োজন। দরকার ভালোবাসার রাজনীতি।”
শনিবার (৬ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর বিএমএ অডিটরিয়ামে অনুষ্ঠিত দৈনিক ঐশী বাংলার চতুর্থ প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত উৎসব ও গুণীজন সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। অনুষ্ঠানে সংবর্ধিত ব্যক্তিদের অভিনন্দন জানিয়ে তিনি আরও বলেন, সুস্থ সাংবাদিকতার চর্চা জরুরি, কারণ পাঠক চায় বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ। সংবাদপত্রকে পাঠকের কাছে বিশ্বাসযোগ্য ও আস্থার জায়গা করে তুলতে হবে এবং অসুস্থ সাংবাদিকতাকে সুস্থতার পথে নিয়ে যেতে হবে।
শারমীন এস মুরশিদ স্মরণ করেন, ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ছিল সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা। কিন্তু সেই স্বপ্ন আজও পূর্ণ হয়নি। তার ভাষায়, “গণতন্ত্রে সাম্যের যে আকাঙ্ক্ষা, তা যতই কাছে যেতে চাই, ততই দূরে সরে যাচ্ছে। ভেঙে পড়ছে সমাজ, ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র রাজনৈতিক দর্শনে টুকরো টুকরো হয়ে যাচ্ছে দেশ।”
তিনি আরও উল্লেখ করেন, স্বাধীনতার পর একের পর এক আন্দোলন বঞ্চনা ও অপূর্ণতার ভার বহন করেছে, যা গিয়ে মিশেছে ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানে। তার মতে, এই অভ্যুত্থান ছিল তরুণদের ক্ষোভের বিস্ফোরণ। তারা বড়দের উদ্দেশে সরাসরি বলেছে, “তোমরা মিথ্যাচার করেছো, দুর্নীতি করেছো, আমাদের অধিকার কেড়ে নিয়েছো। আমাদের ন্যায্যতার জায়গায় দাঁড়াতে দাওনি।”
উপদেষ্টা বলেন, “২৪ শুধু হাসিনা সরকারকে সরিয়ে দেয়নি, ৫০ বছরের জমে থাকা আবর্জনা পরিষ্কার করার চেষ্টা করেছে। আর আমরা বড়রা, অভিভাবকেরা, এই প্রজন্মের কাছে সবচেয়ে বড় অপরাধী।” তিনি স্বীকার করেন, দীর্ঘদিন ধরে সমাজে মেধার চর্চা উপেক্ষিত হয়েছে। “সেদিন যখন ওরা বলেছিল—কোটা নয়, মেধা—আমরা সেটা করতে পারিনি। আত্মীয়-স্বজনের প্রভাবে আমরা অপসংস্কৃতির দেশ চালিয়েছি।”
তার বক্তব্যে উঠে আসে তরুণদের প্রতি আস্থা ও নতুন সূচনার আশা। তিনি বলেন, “এই বাচ্চারা মেধার কথা বলে আমাদের নতুন করে চিন্তার জায়গা তৈরি করে দিয়েছে। আমাদের সামনে সুযোগ এসেছে দেশকে নতুন করে ভাববার, নতুন করে গড়বার।”