রংপুর-৬ আসন থেকে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) (National Citizen Party – NCP)-র হয়ে মনোনয়নের প্রত্যাশায় এলাকায় ব্যাপক প্রচারণা চালাচ্ছেন তাকিয়া জাহান চৌধুরী। তার প্রচারণার পোস্টারে ব্যবহার করা হয়েছে ‘শাপলা’ প্রতীক, যা ঘিরে ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে আলোচনার ঝড় এবং সংশ্লিষ্ট মহলে অসন্তোষ।
তাকিয়ার পোস্টারে উল্লেখ রয়েছে, তিনি ২৪-রংপুর-৬ (পীরগঞ্জ) আসনে এনসিপির মনোনয়নপ্রত্যাশী এবং ‘শাপলা মার্কা’ প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নিতে চান। পোস্টারে লেখা রয়েছে, তিনি সবার সমর্থন ও দোয়া প্রত্যাশা করেন। এসব পোস্টার ইতোমধ্যে পীরগঞ্জ উপজেলার ভেণ্ডাবাড়ীসহ আশপাশের এলাকায় চোখে পড়ছে। অথচ এখন পর্যন্ত নির্বাচন কমিশন ‘শাপলা’কে এনসিপির প্রতীক হিসেবে স্বীকৃতি দেয়নি।
নির্বাচন কমিশনে এনসিপি ‘শাপলা’ প্রতীক চেয়েছে ঠিকই, তবে জাতীয় ফুল হওয়ায় কমিশন এখনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়নি। এমন অবস্থায় প্রতীকটি ব্যবহার করে আগাম প্রচারণা শুরু করায় বিষয়টি নিয়ে উঠেছে নানা প্রশ্ন।
তাকিয়া জাহান চৌধুরীর কোনো আনুষ্ঠানিক দলীয় পদ না থাকলেও তিনি ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের গণঅভ্যুত্থানের পর থেকেই এনসিপির বিভিন্ন কর্মসূচিতে সক্রিয় রয়েছেন। এর আগেও দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি এই আসন থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন, যদিও সে নির্বাচনে পরাজিত হন।
বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে তাকিয়া জাহান চৌধুরী জানান, “এই আসনে এনসিপির হয়ে নির্বাচনে অংশগ্রহণের আগ্রহের কথা আমি দলের উচ্চপর্যায়ের নেতাদের জানিয়েছি। তারা আমাকে কাজ চালিয়ে যেতে বলেছেন।” তবে প্রতীক বরাদ্দের আগেই পোস্টারে শাপলা ব্যবহার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “পোস্টারগুলো আগেই ছাপানো হয়েছিল, যখন প্রতীক নিয়ে বিতর্ক ছিল না। ভুলক্রমেই সেগুলো লাগানো হয়েছে।”
এনসিপির (NCP) উত্তরাঞ্চলের যুগ্ম মুখ্য সংগঠক আসাদুল্লাহ আল গালিব স্পষ্ট করে বলেন, “তাকিয়া জাহান আমাদের দলের একজন সমর্থক। তিনি এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে সদস্য হননি। আমাদের বিভিন্ন এলাকায় কর্মী-সমর্থকেরা ব্যক্তিগতভাবে মনোনয়নের ইচ্ছা থেকে প্রচারণা চালাচ্ছেন।”
সুশীল সমাজের পক্ষ থেকে সমালোচনা এসেছে। এক প্রতিনিধির ভাষায়, “যখন দলটির নিবন্ধনই হয়নি, প্রতীকও নিশ্চিত নয়, তখন এভাবে আগাম প্রচার চালানো বিতর্কিত এবং বিভ্রান্তিকর।”
এদিকে জেলা অতিরিক্ত নির্বাচন কর্মকর্তা রবিউল আলম বলেন, “নির্বাচনের তফসিল এখনও ঘোষণা হয়নি। তাছাড়া কোনো প্রতীক সংক্রান্ত গেজেটও প্রকাশিত হয়নি। ফলে এই মুহূর্তে বিষয়টি নিয়ে আমাদের কিছু করার নেই।”
অন্যদিকে এনসিপির নেতারা বলছেন, শাপলা প্রতীকটি এখন অনেক মানুষের কাছে এনসিপির পরিচায়ক হয়ে উঠেছে। তাই এখন নিষেধ করারও উপায় নেই বলেও দাবি তাদের।