আসছে নভেম্বরে ঢাকায় আসছেন বিতর্কিত ইসলামিক বক্তা ডা. জাকির নায়েক (Dr. Zakir Naik)। তবে মালয়েশিয়া থেকে তার এই সফরকে ঘিরে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে প্রতিবেশী ভারত। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় স্পষ্ট জানিয়েছে—বাংলাদেশে পা রাখামাত্রই জাকির নায়েককে যেন ভারতের হাতে তুলে দেওয়া হয়, এটাই তাদের প্রত্যাশা।
গত ৩০ অক্টোবর নয়াদিল্লিতে এক সংবাদ সম্মেলনে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রনধীর জয়সওয়াল (Randhir Jaiswal) সাংবাদিকদের বলেন, “জাকির নায়েক একজন পলাতক আসামি। তিনি ভারতে ওয়ান্টেড। তাই আমরা আশা করি, তিনি যেখানেই যান না কেন, সংশ্লিষ্ট দেশ তার বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেবে এবং আমাদের নিরাপত্তা উদ্বেগের বিষয়গুলো বিবেচনায় রাখবে।”
২০১৬ সালের আগে পর্যন্ত জাকির নায়েক ভারতে অবস্থান করতেন এবং ইসলাম বিষয়ক আলোচনায় আন্তর্জাতিক খ্যাতি অর্জন করেন। তবে নরেন্দ্র মোদি (Narendra Modi) নেতৃত্বাধীন বিজেপি সরকারের আমলে তার বিরুদ্ধে ‘ঘৃণামূলক বক্তব্য প্রচার’ ও ‘অর্থপাচার’-এর অভিযোগে একাধিক মামলা হয়। বন্ধ করে দেওয়া হয় তার নিয়ন্ত্রিত টেলিভিশন চ্যানেল পিস টিভি (Peace TV)-এর সম্প্রচারও।
এরপর ২০১৬ সালে ৬০ বছর বয়সী এই ধর্মপ্রচারক ভারত ত্যাগ করে মালয়েশিয়ায় আশ্রয় নেন এবং সেখানে স্থায়ীভাবে থাকার অনুমতি পান। ভারতে ফেরা প্রসঙ্গে তিনি একাধিকবার বলেছেন, “ন্যায়বিচারের নিশ্চয়তা না পেলে আমি ভারতে ফিরব না।” ফলে তিনি কার্যত ভারতের বিচারিক আওতার বাইরে রয়েছেন।
এদিকে জানা গেছে, আগামী ২৮ ও ২৯ নভেম্বর ঢাকায় একটি দাতব্য অনুষ্ঠানে অংশ নিতে আসছেন জাকির নায়েক। স্পার্ক ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট আয়োজিত এই অনুষ্ঠানটি অনুষ্ঠিত হতে পারে রাজধানীর আগারগাঁও এলাকায়।
ভারতের দেখাদেখি বাংলাদেশও একসময় জাকির নায়েকের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল। ২০১৬ সালে গুলশানের হলি আর্টিজান হামলার পর প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়, অন্তত দুই হামলাকারী তার বক্তৃতা থেকে অনুপ্রাণিত ছিল। সেই প্রেক্ষিতে তার বাংলাদেশে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়।
তবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা (Sheikh Hasina) সরকারের পতনের পর অনেক নিয়মের মতো সেই নিষেধাজ্ঞাও শিথিল হয়ে গেছে বলে জানা যায়। আর এমন এক সময়েই ঢাকা সফরের প্রস্তুতি নিচ্ছেন জাকির নায়েক। ফলে দিল্লির উদ্বেগ এখন স্পষ্ট—তিনি বাংলাদেশে এলেই যেন তাকে ভারতের হাতে তুলে দেওয়া হয়।


